দুদকের আলোচিত মামলা

সানশাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার নিয়ে বিগত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে— পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস। এই প্রতিষ্ঠানটি অন্য আরও ৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখলে নিয়ে ১০ বছরে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও দেশের বাইরে পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও পিপলস লিজিংয়ের প্রধান ব্যক্তি পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা ৩৭টি মামলায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু, সরকার সমর্থিত ১৪ দলীয় জোটের অংশীদার তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাসসহ অনেক রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন দুদকের দায়ের করা মামলায় আসামির তালিকায়। নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের নামও বাদ যায়নি দুদকের মামলা থেকে। গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে শ্রমিক-কর্মচারীদের ২৫ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে তাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
বিগত পাঁচ বছরে কতগুলো অভিযোগের অনুসন্ধান ও কত মামলার তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সেই তথ্য জানা যায়নি। তথ্য অধিকার আইনে দীর্ঘ দুই মাস আগে দুদকের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে আবেদন করা হলেও এখনও পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন মাধ্যম ও সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য নিয়েই ‘দুদকের ভেতর-বাহির’ শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদনগুলো তৈরি করা হয়েছে। তবে দুদকের ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, আগের বছরগুলোর অনিষ্পন্ন অনুসন্ধানের সংখ্যা তিন হাজার ৭০৬টি। ২০২২ সালে নতুন করে আরও ৯২৭টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়। ওই বছর এক হাজার ১১৯টি অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষ করে দুদক। তবে অনুসন্ধানের পর মামলা দায়ের করা হয় মাত্র ৪০৬টি। বাকিগুলো পরিসমাপ্তি ও অন্যান্যভাবে নিষ্পত্তি করা হয়।
অনিষ্পন্ন তদন্তসহ ২০২২ সালে দুদকের মোট তদন্তের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৯৯৭টি। এরমধ্যে ৩৩১টি তদন্ত শেষ করা হয়।তারমধ্যে আবার ৯৩ মামলার তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ২২৪টি মামলায় চার্জশিট বা অভিযোগপত্র দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিম্ন আদালতে তিন হাজার ২৭৫টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এরমধ্যে দুই হাজার ৮৪৭টি মামলার বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৪৩১টি মামলার কার্যক্রম। উচ্চ আদালতে ৬৭৬টি রিট ও ফৌজদারি অপরাধের বিবিধ মামলা রয়েছে ৮২৯টি। এক হাজার ১৩৬টি ক্রিমিনাল আপিল মামলা ও ৫৭৮টি ফৌজদারি রিভিশন মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এই প্রতিবেদনে কয়েকটি আলোচিত মামলা ও ঘটনার উল্লেখ করা হলো।
বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায়ের হওয়া ৫৯টি মামলায় আদালতে চার্জশিট বা অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক। ২০১৫ সালে এসব মামলা হলেও কোনও মামলার এজাহারেই আসামি হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর। যদিও এসব কেলেঙ্কারির মূল কারিগর হিসেবে সবার আঙ্গুল ছিল তার দিকে। এ নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনাও কম হয়নি। তবে দীর্ঘ আট বছর পর গত ১২ জুন তদন্ত শেষে এই ৫৯টি মামলার ৫৮টির চার্জশিটেই আসামি হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
গ্রামীণ টেলিকম থেকে শ্রমিক-কর্মচারীদের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৩০ মে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার।
গ্রামীণ টেলিকমের ওয়ার্কার্স প্রোফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডাব্লিউপিপিএফ) অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান শেষে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ ১৩ জন বোর্ড সদস্যের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
দেশের আর্থিক খাতে অর্থ লোপাট ও পাচারের অন্যতম খলনায়ক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা দায়ের করে। দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বাধীন একটি টিম এসব মামলা করেন। এরমধ্যে দুটি মামলার বিচার চলছে আদালতে। বাকি মামলাগুলোর তদন্ত চলছে এখনও। পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে এই চারটি প্রতিষ্ঠান দখলে রেখে পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেন এবং সেই অর্থ দেশের বাইরে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। যদিও এ পর্যন্ত দুদকের ৩৭টি মামলায় পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
গত বছরের ১৪ মে পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গে ধরা পড়েন ভারতের কেন্দ্রীয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে। এরপর থেকেই ভারতের কারাগারে আছেন বাংলাদেশের আর্থিক খাতের কেলেঙ্কারির এ খলনায়ক। পিকে হালদারকে ফেরানো ও তার পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুদকের কমিশনার জহুরুল হক এর আগে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, পি কে হালদারকে ফেরত আনার বিষয়টি তাদের একক এখতিয়ারে নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় এ ব্যাপারে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন পর পর তাগাদাও দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আরও যাদের এখতিয়ার আছে, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে দুদক।
বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর অব. এম এ মান্নান ও তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম মান্নানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) থেকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। এসব মামলার বিষয়ে দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে দুটি মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে আদালতে। বাকি মামলাগুলো তদন্ত শেষে পর্যায়ক্রমে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।’
চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য ও তরিকত ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দুই ছেলে সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভান্ডারী ও সৈয়দ আফতাবুল বশর মাইজভান্ডারী এবং প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের কর্মকর্তাসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (২০২৩) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধানে সত্যতা পায় দুদক।
মামলা দায়েরের পর সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী দুদককে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘দুদক নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে চেনে নাই। যা তা কমেন্ট করেছেন সহকারী পরিচালক। চামড়া সব ছিঁড়ে ফেলবো। মাইজভান্ডারীর গায়ে হাত!’ দুর্নীতি দমন কমিশনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দেওয়া এমন বক্তব্যে পরপরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। তবে তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে দুদকের মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেন মাইজভান্ডারী।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৮৫ লাখ ২৯ হাজার ৮১৬ টাকার সম্পদ গোপনসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। গত ৫ জুন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ছিলেন।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জুলফিকার আলী হায়দারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ৫২ লাখ ১৪ হাজার ৮১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও এক কোটি ৪১ লাখ ৮৬ হাজার ২২ টাকা জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নাসির উদ্দিন ও তার স্ত্রী ডলি আক্তারসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। রূপালী ব্যাংক থেকে ৪৪৩ কোটি ৪৫ লাখ ৯৫ হাজার ৫০৪ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী। মামলায় ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়।
বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও বর্তমানে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। প্রতারণা ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৩ এপ্রিল (২০২৩) তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন এবং বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেক্ট্রিক্যাল কোম্পানির সাবেক বোর্ড মেম্বার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মোতালেবসহ তিন জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ মে ৩৬ কোটি ৩৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেন দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তরুন কান্তি ঘোষ।
মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ জুলাই মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম। মামলার প্রধান আসামি এসপি সুব্রত কুমার হালদার বর্তমানে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন।
পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৬ হাজার ৮০০ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ৮৮০ জন নারীসহ মোট ৯ হাজার ৬৮০ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সর্বমোট ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বর্তমানে ফেনীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের অপরাধ বিভাগের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) সৈয়দ আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৫ জুন পিরোজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজ মামলাটি দায়ের করেন। পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি সৈয়দ আব্দুল্লাহ ছাড়াও তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার ও শাশুড়ি কারিমা খাতুনকে আসামি করা হয় এ মামলায়। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এমজিএইচ গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আনিস আহমেদ গোর্কির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে দুদক আইন-২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি দায়ের করেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ১৩৬ কোটি দুই লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ টাকার সম্পদ অর্জন, স্থানান্তর, হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়।
মিসরীয় উড়োজাহাজ লিজ আনার ক্ষেত্রে দুর্নীতি করায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের গচ্চা গেছে এক হাজার ১৬১ কোটি টাকা। এই দুর্নীতির সঙ্গে বিমানের সাবেক ফ্লাইট (অপারেশন) ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদসহ ২৩ জন জড়িত ছিলেন বলে অনুসন্ধানে তথ্য পায় দুদক। এরপরই চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলাটি দায়ের করেন।
আপন জুয়েলার্সের মালিক গুলজার আহমেদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। গত ৬ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী বাদী হয়ে ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।


প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ