উৎসব নয় , দোয়া ও আলোচনা করে বাঘায় বঙ্গমাতার জন্মদিন পালন

নুরুজ্জামান,বাঘা :
জন্মদিনে মানুষ আনন্দ উৎসব করে। বড় ধরণের কেক কাটে। কিন্তু আমরা এমন একজন মহিয়সী নারীর জন্মদিন পালন করছি যেখানে নেই কোন আনন্দ। নেই কেক কাটার আয়োজন। নেই কোন উৎসব। কারণ এটি শোকের মাস। এ মাসে আমরা হারিয়েছি একজন বঙ্গবন্ধু সহ তাঁর আন্দোলনের নৈপথ্যের প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতাকে। যার জন্ম না হলে আমরা আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পারতাম না, পারতাম না মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে। এমনটি অভিমত ব্যক্ত করেন বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার।মঙ্গলবার সকালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার ৯৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন শেষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

 

 

 

সোমবার সকাল ১০ টায় বাঘা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা বটমুল চত্বরে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার ৯৩ তম জন্মদিন পালন উপলক্ষে তাঁর প্রতিকৃতিতে পূস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার, উপজেলা আওয়ামীলীগ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,বাঘা প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন সামাজিক ও সংস্কৃতিক সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ। এরপর দোয়া শেষে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি মো: জুয়েল আহাম্মেদ, বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মন্টু, অধ্যক্ষ নছিম উদ্দিন, আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েজ উদ্দিন,উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদিক কবির, উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান, ডা: আসাদুজ্জামান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ.ফ.ম মাহামুদুল হাসান, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ইমরান আলী ,মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা প্রমুখ । এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলার সকল দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা বৃন্দ। এই আলোচনা শেষে উপজেলা মহিলা বিষয়ত অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সমাজের ১০ জন অসচ্ছল পরিবারকে স্বচ্ছতায় ফিরিয়ে আনার লক্ষে তাদের হাতে একটি করে শেলাই ম্যাশিন তুলে দেয়া হয় ।

 

 

 

 

এদিকে উক্ত অনুষ্ঠানের পর বাঘা উপজেলা আওয়ামীলীগ পৃথক ভাবে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন শেষে তাদের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল করেন।বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, এ দেশের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সকল লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩ তম জন্মবার্ষিকী আজ। এই মহিয়সী নারী ১৯৩০ সালের এই দিনে (৮ আগস্ট) ফরিদপুর জেলার তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক ও মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই-দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট ।

 

 

 

 

বক্তারা আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আপোষহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধীরে-ধীরে শুধুমাত্র বাঙালি জাতির পিতাই হননি, বিশ্ব বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন। এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাঁরই সহধর্মিণী, মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বেগম মুজিব তার পিতা-মাতাকে হারান এবং ১৯৩৮ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুধু সহধর্মিণীই ছিলেন না, ছিলেন সহযোদ্ধা ও কর্মপ্রেরণাদাত্রী।

এই ত্যাগী নারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতির সেবায় মনোনিবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বলে আমরা আজ বাংলা ভাষায় কথা বলা সহ স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পেরেছি। আমরা বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধু সহ ঐ পরিবারের সাহাদত বরণ করা সকলের আত্নার মাগফিরাত ও দোয়া কামনা করছি।

 

 

 

সানশাইন/সোহরাব

 

 


প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৩ | সময়: ৬:১৪ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine