পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচীতে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ

রাজধানীর প্রবেশমুখে পাল্টা
সমাবেশের ঘোষণা যুবলীগের

সানশাইন ডেস্ক : বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করার পর তার পাল্টায় একই এলাকায় শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর সব প্রবেশমুখে এই শান্তি সমাবেশ হবে বলে যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, শনিবার বেলা ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী, গাবতলী, আমিনবাজার, বাবু বাজার, সাইনবোর্ড, কাঁচপুর, যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর সব প্রবেশমুখে শান্তি সমাবেশ করবে যুবলীগ।
এর আগে ঢাকায় মহাসমাবেশ করে সরকার হটানোর এক দফা আন্দোলনের নতুন কর্মসূচিতে রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থানের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করে যুগপৎভাবে একই কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির সমমনা দল ও জোটগুলো। আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগও এদিন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে শান্তি সমাবেশ করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সেখানে বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ অতন্দ্র প্রহরীর মত পাহারা দেবে। রাস্তা বন্ধ করবেন, আপনাদের চলার রাস্তা বন্ধ করে দেব। চোখ রাঙাবেন না, দেশি-বিদেশি যারাই চোখ রাঙাবেন তাদের বলে দিচ্ছি, আমাদের শিকড় অনেক গভীরে। চোখ রাঙিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবেন না।

রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থানের
ঘোষণা বিএনপির

সানশাইন ডেস্ক : ঢাকায় মহাসমাবেশ করে সরকার হটানোর এক দফা আন্দোলনের নতুন কর্মসূচিতে রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থানের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে বিএনপির এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে। শুক্রবার বিকালে ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “এই সরকার বেআইনি, অসাংবিধানিক, অবৈধ এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হতে পারে না। দফা এক, দাবি এক, পদত্যাগ করে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে।”
যে চার জায়গায় বিএনপির অবস্থান করবে সেগুলো হলো- নয়াবাজারে বিএনপি অফিসের সামনে, গাবতলী এস এ খালেক বাসস্ট্যান্ডের সামনে, যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের নিচে দনিয়া কলেজ সংলগ্ন মাঠে, উত্তরা বিএনএস সেন্টারের উল্টো দিকের রাস্তায়।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের ক্রন্তিলগ্নে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ শিকার করতে হয় তরুণদের। আমাদের ছয়শ নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৪০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। গত দুই দিনে মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
“গ্রেপ্তার করে কী আমাদের থামানো যাবে? আমরা পুলিশকে, প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা এই ভয়াবহ একটা দলীয় সরকারের বেআইনি আদেশ-নির্দেশে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।”
এই আন্দোলনের লক্ষ্য তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সমস্ত দলগুলো, যারা আন্দোলনে থাকবে, তাদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করব। আজকে আমরা শুধু একা নই। বাইরের দেশগুলো, আন্তর্জাতিক বিশ্ব তারাও বলছে তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়।
“আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বেআইনি গ্রেপ্তার বন্ধ করুন, যারা কারাগারে আছেন তাদের ছেড়ে দিন। খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। ভালো চাইলে আমাদের এক দফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন।“
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার এই সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারাও বক্তৃতা দেন।
পাশাপাশি লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি অডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়, যদিও আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকায় তার বক্তব্য বিবৃতি প্রচারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
মির্জা ফখরুল মহাসমাবেশের ‘চমক’ হিসেবে তারেক রহমান বক্তব্য দেবেন বলে ঘোষণা করেন। সেই বক্তব্যের পর শনিবার ঢাকা মহানগরের সকল প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে সমাবেশ শেষ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, বিএনপি ও সমমনা দলগুলো যে যুগপৎ আন্দোলন আন্দোলনে রয়েছে, তার অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।”
সরকার ও প্রশাসনের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা আশা করব, যে প্রশাসন, তারা এই কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।
“আমরা এটাও আশা করব, কালকে যে ছুটির দিন আছে এবং পবিত্র আশুরা আজকে রাত থেকে শুরু হবেৃ আজকে রাতেই শেষ হয়ে যাবে। সেই কারণে সকল দলকে একসঙ্গে রেখে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা আমাদের এই কর্মসূচিটা পালন করবৃ সেটাই হচ্ছে আমাদের আগামীকালের ঘোষণা। প্রশাসন ও সরকার যাতে সহযোগিতা করে এই আশা আমি করছি।”
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ‘এক দফা’ দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা জোট ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঢাকায় আলাদা আলাদাভাবে সমাবেশ করে শুক্রবার। গত ১২ জুলাই শুরু হওয়া এক দফার আন্দোলনের এটি দ্বিতীয় কর্মসূচি ছিল। এর আগে ১৮ ও ১৯ জুলাই সারাদেশে মহানগর ও জেলায় পদযাত্রা করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।


প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৩ | সময়: ৬:২২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ