সর্বশেষ সংবাদ :

যুবলীগ নেতার কব্জি কর্তন : নাটোর আ’লীগের সম্পাদকসহ ৩০ নেতাকর্মীর নামে মামলা, আটক ৫

স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর: নাটোরে যুবলীগ নেতা মিঠুন আলীকে কুপিয়ে হাতের কবজি কেটে নেওয়ার অভিযোগে সোমবার মধ্যরাতে নাটোর সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তজা আলী বাবলু, তার সহোদর নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুলকে যথাক্রমে ১, ২ ও ৩ নম্বর অভিযুক্ত করা হয়েছে।
নাটোর পৌর যুবলীগের তিন নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আহত মিঠুন আলীর ছোট ভাই স্বপ্ন বাদশা বাদী হয়ে সোমবার রাত ১২টার পর এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ ছাড়া আরো ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। মামলায় ইতোমধ্যে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নাটোর থানার উপ-পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন।
মামলায় বলা হয়েছে, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাদী ও তার আহত ভাই মিঠুন আলী শহরের ভবানীগঞ্জ মোড়ের দলীয় অফিস থেকে পাশের বলারীপাড়ার বাসায় ফেরার সময় অভিযুক্ত মাহতাব হোসেনের বলারীপাড়ার বাসার সামনে অভিযুক্তরা তাদের ঘিরে ধরে। এসময় প্রধান অভিযুক্ত নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান নির্দেশ দিলে অভিযুক্তরা পিস্তুল, হাসুয়া, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, লোহার রড, মরিচের গুড়া ও বোতলে ভরা তরল ক্যামিকেল নিয়ে তাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
১২নং অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম পিস্তুল দিয়ে গুলি বর্ষণ করে আতংক সৃষ্টি করে। ৪, ৭ ও ৮ নং আসামী যথাক্রমে সোহাগ, রিপন ও সাব্বির ধারালো চাপাতি নিয়ে তার ভাই মিঠুন আলীর উপরে আক্রমন করে এলোপাথাড়ী কুপিয়ে জখম করে। সোহাগ চাপাতি দিয়ে মাথায় আঘাত করার সময় মিঠুন আলী হাত দিয়ে ঠেকালে তার হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তাদের দুই ভাইকে বাঁচাতে এসে এসময় হামলাকারীদের আক্রমনে তাদের বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম, স্বাক্ষী আব্দুল্লাহ, আল আমিন ও বকুল গুরুত্বর ভাবে আহত হন। বর্তমানে মিঠুন আলী ঢাকার একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিতসাধীন রয়েছেন।
মামলায় আটককৃতরা হলেন, শহরের বলারীপাড়ার আশরাফ (৫০) ও মহসিন (৩১), কানাইখালীর রুমন (২৬), কান্দিভিটুয়ার ওবায়দুল সরদার (৪০) ও মীরপাড়ার নাসির (২৭)।
মঙ্গলবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আটক ৫ জনকে নাটোর সদর আমলী আদালতে হাজির করলে বিচারক জামিন না দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আটককৃতরা সকলেই মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমীন নেলি বলেছেন, মামলা দায়ের হয়েছে। এখন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেছেন, গত ১৬ মে জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও নাটোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নান্নু শেখকে প্রকাশ্যে দিনের বেলা শহরের ভবানীগঞ্জ মোড়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছিল এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারী মিঠুন আলী সহ কয়েকজন। সেই ঘটনার জেরে নান্নু শেখের লোকজন হয়ত বা রোববার রাতে মিঠুন ও তার অনুসারীদের উপরে হামলা করে। পুলিশ তখনকার অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনলে আজ হয়ত এমন ঘটনা ঘটতোই না। আজ যারা হামলা করেছে এবং যারা হামলার শিকার হয়েছে উভয়ই সন্ত্রাসী গ্রুপ।
রমজান বলেন, তিনিসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে এবং গুরুতর আহত নান্নু শেখের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার মাধ্যমেই প্রমানিত হয়েছে এটা একটা মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা।
রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতেই তিনিসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের এই মামলায় আসামী করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘৃণাভরে তাদের এই অপচেষ্টা প্রত্যাখান করবে। তিনি আইনগত ভাবেই বিষয়টি মোকাবেলা করবেন।


প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৩ | সময়: ৪:৩৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ