দক্ষিণ আফ্রিকায় বসছেন ব্রিকসের নেতারা, থাকছেন না পুতিন

সানশাইন ডেস্ক: বিশ্ব অর্থনীতির এক চতুর্থাংশের নিয়ন্ত্রণকারী পাঁচটি দেশের জোট ব্রিকস এর নেতারা আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় মিলিত হচ্ছেন। পাঁচ দেশের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে নামকরণ করা এই জোটের সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
রয়টার্স বলছে, বিশ্বব্যাপী পশ্চিমা আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করতে শিথিল এ জোটটিকে কীভাবে একটি ভূ-রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করা যায় এবারের বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা করবেন দেশগুলোর নেতারা। ইউক্রেইনে কথিত যুদ্ধাপরাধ নিয়ে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মুখে থাকা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না। তবে বৈঠকে থাকবেন চীন, ভারত, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতারা।
২২ থেকে ২৪ অগাস্ট পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকসের এবারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে যোগ দেবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ব্রাজিলের লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রয়টার্স জানিয়েছে, তারা কী নিয়ে আলোচনা করার পরিকল্পনা করেছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে আলোচ্য সূচীর মধ্যে জোটের সম্প্রসারণের বিষয়টি উপর দিকে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত সম্প্রসারণ নিয়ে ব্রিকস নেতাদের মধ্যে দ্বিমত চলছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘গ্লোবাল সাউথ’ হিসেবে তকমা আটা অঞ্চলগুলোর প্রায় ৪০টি দেশ আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে এ জোটটিতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব, ইরান, আর্জেন্টিনা, মিশর, বাংলাদেশও আছে। আগ্রহ প্রকাশ করা এ দেশগুলোকে যুক্ত করে জোটটিকে আরও সম্প্রসারণ করা হবে কি না, বৈঠকে এ বিষয়ক আলোচনা প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকা চীন তার ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বাড়াতে চাইছে। তারা ব্রিকসের দ্রুত সম্প্রসারণ চায়। কিন্তু বাধ সাধছে ব্রাজিল, তাদের আশঙ্কা ইতোমধ্যেই প্রায় গতিহারানো এই শিথিল জোট নতুনদের যুক্ত করার মাধ্যমে আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার মধ্যে পড়ে যাওয়া রাশিয়ার দরকার বন্ধু, তাই তারও চায় ব্রিকসে নতুন সদস্য যুক্ত হউক। আফ্রিকায় রাশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দক্ষিণ আফ্রিকাও ব্রিকসের সম্প্রসারণের পক্ষে।
এই দুই পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নিয়ে আছে ভারত। ব্রিকস জোটের পাঁচ রাষ্ট্রের অবস্থান বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে। তাদের অর্থনীতি পরিচালনার ধরনও স্পরস্পর থেকে ভিন্ন। তারপরও যে বিষয়টি তাদের একত্র করেছে, সেটি হল বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা নিয়ে তাদের অস্বস্তি, সন্দেহ। তারা মনে করে, এই বিশ্বব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ধনী রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থ রক্ষা করে, যারা বৈশ্বিক রীতিনীতি নির্ধারণ করে সেগুলো মানতে বাধ্য করে কিনতু প্রায় সময় নিজেরাই সেগুলোর তোয়াক্কা করে না।


প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৩ | সময়: ৫:১০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ