রাজশাহীর শিল্পায়নে কোনো ভর্তুকি দেয়া হয়নি : মিনু

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী তো অবহেলিত ও বঞ্চিত না, যারা নেতৃত্বে আছেন তারা রাজশাহীকে অপমান করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবের মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা মিজানুর রহমান মিনু। তিনি বলেন, অন্যান্য বিভাগে অনেক কাজে সরকার ভর্তুকি দিলেও রাজশাহীর শিল্পায়নে কোনো ভর্তুকি দেওয়া হয়নি। হায়দ্রাবাদ সিল্কসিটির আদলে যদি রাজশাহীর সিল্ক সিটি করা হয় তাহলে প্রাইভেট সেক্টরের উন্নতি হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমিতে দর্শকের উপস্থিতিতে চ্যানেল আইয়ে প্রতিদিন প্রচারিত টক শো ‘তৃতীয় মাত্রার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন অনুষ্ঠানে রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবসায়ীক অবস্থা, আঞ্চলিক অর্থনীতি, বেসরকারি খাত, মাঝারি শিল্প, নারী অধিকার, তরুণেদের উন্নয়ন ও রাজনীতিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী সিটি কর্পেরেশনের সাবেক মেয়র, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু।
দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রসঙ্গে মিনু বলেন, রাজশাহীতে ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম মাস্টারপ্লান করা হয়। এটা শিল্প এলাকা, বিসিক, ইপিজেড, রেশম নগরীর এগুলোর প্লান করা হয়েছিলো কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কোনো অগ্রগতি হয়নি। এগুলো বাস্তবায়িত হলে শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণ সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল ওদুদ দারা দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশকে উন্নয়নের শেখরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। নদীবন্দর না থাকার কারণে ব্যয়বহুল পরিবহনকে তিনি রাজশাহীতে শিল্প উন্নয়নের বড় বাঁধা হিসেবে তুলে ধরেন। পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রসঙ্গে যমুনা রেলের সাথে চিটাগং ও মংলা পোর্টকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেটা রাজশাহীর শিল্প উন্নয়নকে অবহিত করবে। এছাড়া প্রত্যেক জেলায় ইপিজেড করার মাস্টার স্থান রয়েছে, যাতে স্থানীয় ও বিদেশি উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করা যায়।
কৃষিখাতে চাষীদের ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমের ব্যবসায় ভাড়া পড়ছে, প্রচুর পরিমানে মাংস ব্যবসায়ী তৈরি হচ্ছে।
রাজশাহী বঞ্চিত হচ্ছে জাতীয় বিনিয়োগ থেকে এই অভিযোগের প্রতিত্তুরে বলেন, রাজশাহীর জন্য যে ডেভেলপমেন্ট ফাণ্ড করা হয়েছে সেটার ডিসবার্সমেন্ট শুরু হয়েছে কিন্তু এখনো সব হয়নি। যমুনা ও কপোতাক্ষ প্রজেক্ট নিয়ে সম্ভাবনা আছে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া রাজশাহীর হাইটেক পার্কে ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবাই আউটসোর্সিং করতে পারবে বলেন জানান তিনি।
পুঁজিবাদী সমাজে ব্যবসায়ীক প্রতিযোগীতার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা হারিয়ে যাচ্ছে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লব না করে যেতে পারার কারণে পুঁজিবাদের রং সবার গায়ে লাগলেও পুঁজিবাদের উপযুক্ত শিক্ষা সবার নেই।
পানি সংকট নিয়ে, রাজশাহী প্রতি অন্যায় হচ্ছে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উজানের দেশগুলো সবসময়ই নিজের দেশের পানি সংরক্ষণের জন্য কূটনীতি করে। বাঁধের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এই সমস্যার সম্মুখীন বলে মতামত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিদিন প্রচারিত টক শো ‘তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন, রাজশারী বিভাগের ব্যবসায়ীবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্তরের পেশাজীবী সমাজের প্রতিনিধিগণ।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে দর্শকরা সরাসরি আলোচকদের আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং আলোচকরা তার উত্তর দেন।


প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ