সর্বশেষ সংবাদ :

রাণীনগরে লক্ষমাত্রার মাত্র ১৫ শতাংশ জমিতে আউশ রোপণ

রাণীনগর প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে চলতি আউশ মৌসুমে সম্ভাব্য লক্ষমাত্রার মাত্র ১৫.৩৫ শতাংশ জমিতে আউশ ধান রোপণ করা হয়েছে। এ মৌসুমে উপজেলায় ধান রোপনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল এক হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ধান রোপন করা হয়েছে মাত্র ১৮৫ হেক্টর জমিতে। ফলে সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষমাত্রার তুলনায় প্রায় চার হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদন ঘাটতিতে পরবে রাণীনগর উপজেলা।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাযায়, গত ২০২১ সালে উপজেলায় এক হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষ হয়েছিল। সে সময় ধান উৎপাদন হয়েছিল ৪ হাজার ৮৯০ মেট্রিকটন। এরপর ২০২২ সালে একহাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান রোপন করা হয়। ওই আবাদে ধান উৎপাদন হয় ৪ হাজার ৭৪৯ মেট্রিকটন।
চলতি মৌসুমেও আউশ ধান রোপনের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে এক হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে এবং ধানের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৪হাজার ৮৯০ মেট্রিকটন। সেখানে উপজেলা জুরে ২১ জুন পর্যন্ত মাত্র ১৮৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। ফলে সম্ভাব্য লক্ষমাত্রার তুলনায় ৪ হাজার ১৪০ মেট্রিকটন ধান উ’পাদন কম হবে। যদিও কৃষি অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, অনাবৃষ্টির কারনে সময় মতো কৃষক ধান রোপন করতে পারেনি। কিন্তু কৃষকরা বলছেন, ধানের ন্যায্য দর পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা এবং বিভিন্ন প্রতিকুলতার কারনে প্রায় কৃষকই আউশ ধান রোপন করেননি।
উপজেলার কালীগ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বৈশাখ মাসে বোরো ধান কাটার পর পরই জমিতে আউশ ধান রোপন শুরু হয়। বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধান রোপণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এবার অধিক খড়ার কারনে ধান চাষে আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় রোপণ করা হয়নি।
হরিপুর গ্রামের চন্দ্র বলেন, গত বছর দেড় বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছিলাম। কিন্তু এবার গ্রামের কেউ ধান রোপণ না করায় আমিও একা ধান রোপণ করিনি। কারন একা ধান রোপণ করলে অধিক পোকা-মাকড়ে ধান নষ্ট হয়ে যাবে।
আবাদপুকুর বাজারের হাফিজার রহমান বলেন, গত বছর চার বিঘা জমিতে আউশ ধান রোপণ করেছিলাম। এবার চার বিঘা জমিতে ধান রোপনের জন্য বীজ বপন করেছিলাম। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারনে ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আর ধান রোপণ করিনি।
উজাল পুরের আব্দুল মালেক বলেন, আউশ ধান যে সময় কাটা-মাড়াই করা হয়, সে সময় বৃষ্টি-বাদলের কারনে ধান ঘরে তোলা খুব কষ্ট পোহাতে হয়। তাই এবার ধান রোপণ করিনি।
আবাদপুকুর বাজারের কৃষক এলাহাী বলেন, এবার প্রায় দুই বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছি,কিন্তু আশে-পাশে আর কেউ ধান রোপণ না করার কারনে পোকা মাকড়ে ভরে যাচ্ছে। ওষুধ দিয়েও তেমন সুফল হচ্ছেনা। তবে আর কিছু দিন দেখে ধানের পোকা ছাড়াতে না পারলে জমির ধান ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে আমন ধান রোপণ করব।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা নাজনীন বলেন,চলতি মৌসুমে আউশ আবাদের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে এক হাজার২০৫ হেক্টর জমিতে। গড় উ’পাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে চার হাজার ৮৯০ মেট্রিকটন ধান।
কিন্তু অধিক খরার কারনে কৃষকরা ধান রোপণ করতে পারেননি। এবং অনেক জায়গায় বীজতলা মরে নষ্ট হয়ে গেছে।এর মধ্যেও ২১জুন পর্যন্ত ১৮৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। তবে আরো কিছু জমিতে ধান রোপণ হতে পারে বলে জানান এই কর্মকর্তা।


প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৩ | সময়: ৫:২১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ