বাগমারার ‘বাদশা’কে নিয়ে বিপাকে কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার : নাম তার ‘বাদশা’। তবে ‘বাদশা’ কোনো শক্তিশালী মানুষের নাম নয়। এটা আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য লালন-পালন করা একটি বিশাল ষাঁড়ের নাম। সাদা-কালোর মিশ্রণে সুঠাম স্বাস্থ্যের বাদশার ওজন প্রায় ৩০ মণ। এই ষাঁড়টি নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন লালন-পালনকারি কৃষক।
বাড়িতে বিক্রি না হওয়ায় তাকে নেয়া হয়েছে ঢাকার গাবতলি পশু হাটে। সোমবার তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাদশার দাম হাঁকা হয়েছে ১২ লাখ টাকা। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত তার দাম উঠেছে সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত।
অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি দেশীয় পদ্ধতিতে নিজের বাড়িতে লালন পালন করেছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান ও তার স্ত্রী আশেদা বিবি। লুৎফর পেশায় একজন কৃষক। তার স্ত্রী আশেদা বিবি গৃহিণী। তারা সাড়ে তিন বছর ধরে লালন-পালন করে ষাঁড়টি এমন সুঠাম বানিয়েছেন। ষাঁড়টি আনুমানিক লম্বায় ১০ ফুট, উচ্চতায় ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, প্রস্ত ৮ ফুট। প্রায় ১২০০ কেজি ওজনের গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১২ লাখ টাকা।
লুৎফর রহমান বলেন, বাদশাকে হাটে নেওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই বিভিন্নভাবে ষাঁড়টির ছবি ও বর্ণনা অনলাইনে দিয়ে বিক্রি করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ক্রেতা পাওয়া যায়নি। তাই ঢাকার গাবতলি হাটে নিয়ে হয়েছে। কিন্তু ক্রেতা নেই। এখন পর্যন্ত একজন দাম বলেছে সাড়ে সাত লাখ টাকা। এ টাকায় বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হবে।
লুৎফর রহমান বলেন, বাড়িতে দেশী গরুর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভির জন্ম হয়। সেই গাভি লালন পালন করে একই জাতের ষাঁড়ের সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বাছুর জন্ম দেয় গাভিটি। তিন বছর আগে দেড় লাখ টাকায় সেই গাভি বিক্রি ষাঁড়টি লালন-পালনের খরচ চালাচ্ছেন।
বাদশার খাদ্য তালিকায় আছে কাঁচা ঘাস, খড়, গমের ভুসি, চালের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া, খইল, ছোলা ও খুদের ভাত। সব মিলে দিনে ১৫ থেকে ২০ কেজি করে খাবার খায় বাদশা। শুরুর দিকে খাবার কম খেলেও দিনে দিনে তার খাবারের চাহিদার পরিমাণ বেড়ে যায়।
জন্মের পর থেকেই ষাঁড়টি দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করছেন বলে জানান আশেদা বিবি। তিনি বলেন, সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে একটি গাভি কিনেছিলাম। সেই গাভি থেকে ষাঁড়টির মা হয়েছে। ষাঁড়টিকে পরিবারের একজন সদস্যের মতো করে লালন-পালন করেছি। পরিবারের সবাই মিলে যত্ন করে ষাঁড়টি বড় করা হয়েছে। তার পেছনে সাড়ে তিন বছরে অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে তাদের।


প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৩ | সময়: ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ