ড্রাগন চাষে ভাগ্য বদলাচ্ছেন যুবক

রুমা ইসলাম, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ড্রাগন ফল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন কামরুজ্জামান স্বপন। কয়েক বছর আগেও দেশের মানুষ জানতো এটি বিদেশি ফল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে এর চাষ এতটা বেড়েছে যে, এখন এটি দেশি ফল বলেই মানুষের কাছে পরিচিত।
সিরাজগঞ্জে উল্লাপাড়ার তালায় গ্রামে ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। টক-মিষ্টি ও মিষ্টি স্বাদের ড্রাগন চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন চাষি কামরুজ্জামান স্বপন। নিজ বাড়ির ছাদ ও কৃষি জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ড্রাগন ফলের চাষ, চারা উৎপাদন ও ফল বিক্রি করে এখন স্বাবলম্বী তিনি। এই কৃষকের উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির উন্নত জাতের ড্রাগন চারা বিক্রি হচ্ছে সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায়। তার এমন সাফল্য দেখে ড্রাগন চাষে ঝুঁকছে স্থানীয় বেকার যুবকরা।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ জেলা সদর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে উল্লাপাড়া পৌর শহরের ঝিকিড়া মহল্লার ড্রাগন চাষি কামরুজ্জামান স্বপন। একটি সরকারি অফিসের কর্মচারী।
স্বপন জানান, ইউটিউবে ড্রাগন চাষ দেখে তিন বছর আগে চাকরির পাশাপাশি সখের বশে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেন। প্রথমে অন্যের জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন চাষ করতে গিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হন। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। পরবর্তী সময়ে নিজ বাড়ির ছাদ ও আঙ্গিনায় স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চাকরির ফাঁকে নতুন উদ্যমে শুরু করেন চাষ। এরপর সাফল্য পেতে থাকেন তিনি। নিজেই বিভিন্ন উন্নত জাতের ড্রাগন চারা সংগ্রহ করে চাষ করেন।
এভাবে তিনি তার বাড়ির ছাদে প্রায় ১৫ শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির বড় ড্রাগন গাছ তৈরি করেছেন। এসব গাছে ধরেছে নানা রঙ্গের ড্রাগন ফুল ও ফল। শুধু বাড়ির ছাদই নয়। পাশাপাশি আরও দুই বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। স্বপন এই ড্রাগন গাছ থেকে চারা উৎপাদন করে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। তার উৎপাদিত চারার চাহিদা রয়েছে জেলা জুড়ে। ফল ও চারা বিক্রি করে তিনি বছরে আয় করছেন প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা।
স্বপনের বাড়ির ছাদ আর ক্ষেতে নানা জাতের সারি সারি ড্রাগন গাছে ধরেছে বাহারি সব ড্রাগন ফল আর ফুল। প্রতিদিন নানা রঙের সুস্বাদু ফল কিনতে আর দেখতে আসছে উৎসুক মানুষ। স্বপনের পুরো বাড়িটি যেন ড্রাগনের বাগান। পাইকারি ও খুচরা ফল বিক্রি হচ্ছে নিজ বাড়িতেই।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি বলেন, ড্রাগন চাষে খরচ কম। দেশেই নানা জাতের ড্রাগন চারা পাওয়া যায়। এতে বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ ড্রাগন চাষিদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করছে। বেকার যুবকরা প্রশিক্ষণ ও সহায়তা পেলে তাদের ভাগ্য বদলের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হবে।


প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ | সময়: ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর