সর্বশেষ সংবাদ :

সবুজ মায়া নগরী রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার: বরেন্দ্রে যেখানে মরুকরণের দিকে যাচ্ছে। দিনে দিনে বাড়ছে তাপমাত্রা। যা অনেকেই চিন্তার কারণ। সেখানে রাজশাহী মহানগরীর চিত্র বিপরীত। নগরীর বিভিন্ন সড়কের বিভাজনগুলো যেন ফুলের বাগান। রাস্তার দুই পাশে সারিসারি দাঁড়িয়ে ছাতিম ফুলের গাছ। যেখানেই পতিত মাটি সেখানেই দাঁড়িয়ে গাছ। এ যেন এক সবুজ মায়া নগরী।
গত সাড়ে ৪ বছরে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ঐকান্তিক চেষ্টায় রাজশাহী মহানগরী যেন আজ সবুজের নগরী। সিটি করপোরেশনের হিসাবে, নগরীর ৩৫ কিলোমিটার সড়কের বিভাজনজুড়ে শোভা পাচ্ছে নানান বাহারের ফুল। পথচারীদের মন জুড়িয়ে যায় রাস্তার এক শোভা দেখে। যে কেউ এ শহরের প্রেমে পড়ে যায়। কোথাও লাল কৃঞ্চচুড়া, কাঠগোলাপ, কখনও হলুদ সূর্যমুখী কিংবা বেগুনি জারুল মন কাড়ছে পথচারীদের।
নগরীর অন্যতম ব্যস্ত সড়ক আলুপট্টি থেকে তালাইমারির আইল্যান্ডজুড়ে রয়েছে রক্তকরবী, বাগানবিলাস, রঙ্গন, বেগুনি নার্গিস, মাধবীলতা ও বকুল। শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বর থেকে লক্ষ্মীপুর মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে কাঠগোলাপ, দুই পাশে ছাতিম ফুলের গাছ শোভা পাচ্ছে। বিমানচত্বর থেকে বিহাসপল্লীর সাত কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে শোভা ছড়াচ্ছে পাম, কাঠগোলাপ, চেরি ও টগর। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে আছে কৃঞ্চচূড়ার গাছ। সারা বছরই যেন গাছগুলোর ফুল পথচারীদের শোভা দিতে পারে এমন পরিকল্পনা করে রোপন করা আছে।
মহানগরী বিভিন্ন রাস্তার দুইধার, আইল্যান্ডে বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির পাতাবাহার ও ফুল গাছ শোভা পাচ্ছে। এর মধ্যে বৈলাম, তেলসুর, ধারমারা, উদাল, ঢাকিজাম, তিতপাই, গুটগুটিয়া, হলুদ, বাটনা, গর্জন, বনজলপাই, ছাতিয়া, শ্বেত চন্দন অন্যতম।
এছাড়াও বাগান বিলাস, অ্যালামুন্ডা, কলাবতি, দোলনচাঁপা, গন্ধরাজ, চম্পা, হাসনাহেনা ও মিনি রঙ্গন, সূর্যমুখী, গৌরিচোরা, রঙ্গন, টগর, মুসান্ডা, টগর, মুসান্ডা, করবি, শিউলি, কাঠগোলাপ, কাঞ্চন, পলাশ, ডেইজি, কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, জারুল, জ্যাকারান্ডা, পাম, রঙ্গন, কাঠ, করবি, চেরি, অ্যালামুন্ডা, জারুল, সোনালু, বকুল, মহুয়া, হৈমন্তী, রাধাচূড়া, কাঞ্চনসহ বিভিন্ন গাছ রাস্তার বিভাজন ও পাশে।
রাসিকের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ-উল-ইসলাম বলেন, মাননীয় মেয়র মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় গত সাড়ে ৪ বছরে দুই লাখের বেশি স্থায়ী ও ১০ লক্ষাধিক হেজ জাতীয় বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ৩৫ কিলোমিটার সড়ক বিভাজক বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চারা রোপণের মাধ্যমে ফুলে ফুলে সুশোভিত করা হয়েছে। রাসিকের পক্ষ থেকে শুধু এগুলো রোপণ করাই হয়নি। নিয়মিত যত্ন নেয়া হয় গাছগুলোর। মাননীয় মেয়র এ বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ নেন।
এদিকে বৃক্ষরোপণে বিশেষ অবদান রাখায় আবারো ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০২১’ পাচ্ছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)।
এরআগে ২০০৯ ও ২০১২ সালে বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছিল রাজশাহী সিটি করপোরেশন। ২০১২ ও ২০২১ দুইবার সালে জাতীয় পরিবেশ পদক অর্জন করেছে রাসিক। এছাড়া পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে ‘এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি সিটি অফ দ্যা ইয়ার-২০২০’ সম্মাননা অর্জনের খ্যাতিও রয়েছে এই নগরীর। বিপুল পরিমাণ বৃক্ষরোপণসহ বহুমুখী উদ্যোগের কারণে ২০১৬ সালে বাতাসে ক্ষতিকারণ ধূলিকণা কমাতে বিশ্বের সেরা শহর নির্বাচিত হয় রাজশাহী।
রাসিক মেয়র আরো বলেন, ‘বৃক্ষরোপণ, সবুজায়ন ও পরিবেশ উন্নয়নে সারাদেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। পরিবেশ উন্নয়নে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তৃতীয়বারের মতো ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০২১’ এর জন্য চূড়ান্ত মনোনয়ন লাভ আমাদের জন্য আনন্দের ও গর্বের। এই স্বীকৃতি আমাদের পরিবেশ উন্নয়ন কাজকে আরো বেশি উৎসাহিত করবে। এই অর্জন ধরে রেখে রাজশাহীকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে চাই।’


প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৩ | সময়: ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ