সর্বশেষ সংবাদ :

সাগরে নিম্নচাপ, সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টি হতে পারে

সানশাইন ডেস্ক: বর্ষার শুরু থেকেই বৃষ্টি ছিল কম। পাশাপাশি বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় তাপমাত্রার চেয়ে বেশি গরম অনুভূত হচ্ছিল। এমন অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে নিম্নচাপ। যার প্রভাবে রবিবার থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হচ্ছে স্বস্তির বৃষ্টি। চলতি সপ্তাহজুড়েই যা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্রবন্দর, নদীবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য দেশের চার সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত এবং নদীবন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে সপ্তাহজুড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হবে। তবে থেমে থেমে হবে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকা— বিশেষ করে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরে নিম্নচাপ আকারে উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার, নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
মৌসুমী বায়ু দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের প্রবল অবস্থায় রয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টির কারণে দক্ষিণাঞ্চলে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। অন্যত্র তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে আজ দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।


প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২২ | সময়: ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ