নানা আয়োজনে রাজশাহীতে বিশ্ব মা দিবস পালন

স্টাফ রিপোর্টার:
দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা নিয়ে আমরা যখন হতাশায় ডুবে থাকি, ঠিক তখনই হঠাৎ ফোনকলে মা জিজ্ঞেস করেন ভালো আছিস তো? কিংবা জ্বরের ঘোরে ভিন্ন শহরে কাঁথা মুড়ি দিয়ে যখন অবসন্ন হয়ে আছেন একটা ফোনালাপে ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যায়। সেই সংযোগ সন্তানের সঙ্গে কেবল মায়ের। মধুর হাসিমাখা মুখ দুদণ্ড শান্তিধারা বয়ে আনে, সে মায়েরই হাসি।
রোববার ছিলো মা দিবস। রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘মা’ দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে রোববার সকাল সাড়ে ১০ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায়  প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
মহিলা বিষয়ক অধিদফতর রাজশাহীর উপ-পরিচালক শবনম শিরিনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) রাজশাহীর যুগ্ম-পরিচালক ছানোয়ার হোসেন, রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সাবিহা সুলতানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলমগীর হোসেন, বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু, গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, পুঠিয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ ও দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনা। এছাড়াও সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
‘মা’ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, মায়ের জন্য সন্তানের প্রতিদিনই ভালোবাসা থাকে। তবু আলাদা করে একটু ভালোবাসা জানাতেই আজকের দিনটি। ইতিহাস বলছে প্রাচীন গ্রিসে বিশ্ব মা দিবস পালন করা হলেও আধুনিককালে এর প্রবর্তন করেন এক মার্কিন নারী। ১৯০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিস নামের নারী মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন। ঐ বছর তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটি মাতৃদিবস হিসেবে পালন করেন। ১৯০৭ সালের এক রোববার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। পরে ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হয় মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে পালন করা হবে।
সেই থেকে ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানিসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে। গ্রিসে অনেক আগে থেকেই মা দিবস পালন করা হয় ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখে। ব্রিটেনে মার্চ মাসের চতুর্থ রোববার মা দিবস পালন করা হয়। থাইল্যান্ডে রানি সিরিকিটের জন্মদিনে আগস্ট মাসে পালন করা হয় মা দিবস। তবে বাংলাদেশ সহ অধিকাংশ দেশেই মে মাসের দ্বিতীয় রোববারই মা দিবস পালন করা হয়।
মায়ের জন্য আলাদা করে দিবস লাগে? এই ভালোবাসা তো সার্বক্ষণিক। সেই তর্ক না করে যে মা তার সর্বো”চ দিয়ে সন্তানকে গড়ে তোলেন তাকে একটা দিন বিশেষ কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করুক পুরো বিশ্ব বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ভ্রূণ থেকে দশটি মাস গর্ভে ধারণ করে যে মা সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখান, তাঁকে আলাদা করে “ভালোবাসি” বলতে এই দিন। সেই মায়ের সম্মানে আনুষ্ঠানিকভাবে তার চরণে নত হোক এই পৃথিবীর সন্তানেরা। বক্তব্য শেষে বিশিষ্ট মায়েদের হাতে উপহার ও ফুল দিয়ে সম্মানীত করা হয়।
সানশাইন/সোহরাব

প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৩ | সময়: ১০:৫০ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine