রাজশাহীতে আজ বসছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসর, থাকছে না দর্শক

স্টাফ রিপোর্টার: তীর্যক সূর্যতাপে যখন পুড়ছে রাজশাহী। তাপমাত্রা পেরিয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঠিক সেই সময় আজ বৃহস্পতিবার এখানে আসর বসছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের। এক যুগেরও অধিক সময় পর (প্রায় ১৩ বছর) রাজশাহী শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়াম মাঠে আজ গড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। দীর্ঘদিন পর মাঠে বল গড়ালেও অবশ্য দর্শকদের জন্য আছে দুঃসংবাদ। কারণ এ খেলা গ্যালারীতে বসে উপভোগ করতে পারবেন না দর্শকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার গ্যালারিতে প্রবেশাধিকার থাকবে না কোনো দর্শকের। ফলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ স্টেডিয়ামের গ্যালারীতে বসে দেখার প্রতীক্ষা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে রাজশাহীবাসীর। যদিও ভেন্যুকে ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মাঠজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরাও।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানায়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের যুবারা এই মাঠে ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচ ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলায় অংশ নেবে।
আজন ১১ মে এরপর ১৩ ও ১৫ মে তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগামী ১৭ মে এখানেই দ্বিপাক্ষিক এ সিরিজের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। সিরিজ দুটিকে ঘিরে এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রাজশাহীর ছেলে খালেদ মাসুদ পাইলট বেশ হতাশ দর্শকরা মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন না বলে। তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ গড়াচ্ছে এটা আশার কথা। তবে দর্শকও চায় এই ম্যাচগুলো উপভোগ করতে। আমি যতটুকু শুনেছি নিরাপত্তার কারণে এত বছর পর অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ দেখতে পারছে না রাজশাহীবাসী। এছাড়াও এই ম্যাচটি কোথাও সম্প্রচার হবে না। ফলে ভেন্যুখরা কাটলেও দর্শক খরা থেকে যাবে।
তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান আমাদের দেশের কাছে খুবই একটি সেনসিটিভ টিম। আমি যতদূর শুনেছি, বিসিবি এসব ম্যাচের আয়োজন করে। আর নিরাপত্তা বাহিনী নিরাপত্তা দেয়। নিরাপত্তা বাহিনী পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তার জন্যই মাঠে দর্শকের অনুমোদন দেয়নি। আমি বিসিবির সঙ্গে কথা বলেছি। অন্তত কিছু সংখ্যক পাসকার্ডের ব্যবস্থা করার জন্য, বিশেষ করে যারা খেলার সাথে সংশ্লিষ্ট। এতে করে নতুন তরুণ উদীয়মান খেলোয়াড়দের মনে আগ্রহ যোগাবে।’
এ বিষয়ে বিসিবির রাজশাহী ভেন্যু ম্যানেজার আরেফিন ইসলাম বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হচ্ছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের যুব ওয়ানডে সিরিজ। এছাড়া একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও হবে এই ভেন্যুতে।’ তবে কী কারণে দর্শক থাকছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। শুধু ম্যানেজমেন্ট আমাকে বলেছে দর্শক থাকবে না, এটুকুই জানি।’
রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। বিসিবির দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সকল নিরাপত্তা দিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘দর্শক থাকা না থাকার বিষয়টি একমাত্র বিসিবির ব্যাপার। এটা তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আপনারা মাঠে গেলেই বুঝতে পারবেন দর্শক বসার জায়গাটার কী অবস্থা। আমাদের পক্ষ থেকে শতভাগ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
এদিকে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে হজরত শাহ মখদুম বিমানবন্দরে ইউ-এস বাংলার বিমান যোগে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অনূর্ধ-১৯ ক্রিকেট দল রাজশাহীতে পৌঁছে। এ সময় ইউ-এস বাংলা দল পুরো বহরকে ফুল দিয়ে বরণ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউ এস বাংলার স্টেশন ইনচার্জ কাওসার আলম সনেট ও বিপণন বিভাগের ইনচার্জ বাররু ইবনে আজম ও উভয় দলের অন্যান্য সদস্যরা।
রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামের হেড গ্রাউন্ডসম্যান গোলাম রসুল রতন জানান, আমাদের মাঠের কাজের সবকিছুই প্রায় শেষ হেয়ে গেছে। পিচের কাজ শেষ। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর আবারও খেলা ফেরায় উচ্ছ্বসিত রাজশাহীবাসী। এই খেলার মাধ্যমে পর্যটন খাতকে প্রসারিত করতে সুসজ্জিত করা হয়েছে পুরো শহর। যোগাযোগ ও আবাসন ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় সবাইকে রাজশাহীতে এসে খেলা দেখার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামের কোষাধ্যক্ষ হাসিনুর রহমান টিংকু বলেন, ১৩ বছর পর রাজশাহীতে আবারও খেলা হবে, তাই রাজশাহীবাসী অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। রাজশাহীকে যেন সাজানোই হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানের খেলা ও পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভের জন্য।


প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৩ | সময়: ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ