রাজশাহী সিটিতে বিএনপির সঙ্গে আঁতাতের চেস্টায় ইসলামী আন্দোলন : লিটনের বার্তা নিয়ে মাঠে আ’লীগ

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন সামনে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ দারুনভাবে সোচ্চার হলেও স্থানীয় বিএনপি জামায়াত কিংবা অন্য কোন দল এখনো রয়েছে কার্যত ঘুমিয়ে। কোনো কর্মসূচিও পালন করছেন না বিরোধী পক্ষ। আর মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন সমানে রয়েছেন্ ভোটের মাঠে।
পেশাজীবী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগনের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিদিন মতবিনিময় সভা করছেন। ইতিমধ্যে ওয়ার্ড থেকে মহল্লা পর্যন্ত নির্বাচন মনিটরিং কমিটিও গঠন শুরু করেছে নগর আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে তলে তলে বিএনপির সঙ্গে আঁতাতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামী আন্দোলন। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা।
এদিকে দলীয় নির্দেশনা অনুযাযী এখন সকাল থেকে রাত অবধি ভোটের মাঠ চোষে বেড়াচ্ছেন নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, অংগ সংগঠন, সাবেক ছাত্রলীগ- যুবলীগ নেতাকমীরাও লিটনের উন্নয়ন চিত্র প্ররারের মাধ্যমে মানুষের কাছে ভোটের বার্তা পৌচাচ্ছেন প্রতিদিন। এরই মধ্যে রাজশাহীবাসীর হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে খায়রুজ্জামান লিটনের গত ৫ বছরে রাজশাহী নগরীর উন্নয়ন চিত্র। এসব উন্নয়ন চিত্র সম্বলিত লিফলেটে রাজশাহী নগরীর ৫ বছর আগেও ও পরের চিত্র সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ডে এমনিতেই মেয়র লিটনের অবদান ইতিমধ্যে স্বীকৃিত পেয়েছে নগরবাসীর মধ্যে। তারপরেও প্রচারে কমতি রাখছেন না লিটন অনুসারিরা। ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান- এবার হবে কর্মস্থান’ স্লোগানে এখন সোচ্চার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও। এরই মধ্যে রাজশাহী নগরজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতারা উন্নয়ন চিত্রের বিলবোর্ড টানিয়েছেন। এসব বিলবোর্ডে নগর উন্নয়নের তুলনামুলক চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, গেল ৫ বছরে রাজশাহীর পুরো দৃশ্যপট পরিবর্তন করেছেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। লিটনের উন্নয়ন সারাদেশের মানুষের কাছে প্রশংসিত। তারপরেও সাধারন মানুষের হাতে হাতে এসব চিত্র পৌছানো হচ্ছে-কারণ লিটনই রাজশাহী নগরীর একমাত্র উন্নয়নের প্রতীক। তাকে ভোট দিয়ে আবারো নির্বাচিত করলে রাজশাহীর আরো উন্নয়ন তরান্বিত সম্ভব।

খায়রুজ্জামান লিটন বলছেন, তিনি রাজশাহী নগরীর আরো উন্নয়ন করতে চান। অসম্পূর্ণ অনেক কাজ আছে সেগুলো সম্পুর্ণ করে রাজশাহীকে উন্নয়নের শীর্ষে পৌছাতে চান।
সর্বশেষ সোমবার যুবলীগ, রাজশাহী মহানগরের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময় সভায় লিটন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগই পারে মানুষের কল্যাণ করতে।
লিটন বলেন, নির্বাচন আসলে বিএনপি ভন্ডামির আশ্রয় নেয়। সিটি নির্বাচন নিয়ে এবারো তারা ভন্ডামির আশ্রয় নিয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলছেন, ‘আমাদের দল থেকে কেউ নির্বাচনে অংশ নিবে না। এমনকি কাউন্সিলর পদে কেউ নির্বাচন করবে না।’ আমরা তো দেখেছি অতীতে, এবারো মনে হয় দেখতে হবে, ধানের শীষ মার্কা বাদ দিয়ে তাদের দলের নেতাকর্মীরা কাপ পিরিচ, দোয়াত-কলম বা চেয়ার-টেবিল মার্কা নিয়ে মেয়র পদে, কাউন্সিলর পদে ভোট করতে পারে। তারা ভোট করলে ভোটের মাধ্যমে জবাব দেয়া হবে। আওয়ামী লীগ ভোটের দল। আর বিএনপি অন্ধকার থেকে আসা, ক্যান্টনমেন্ট থেকে আসা দল। তাদেরকে আমরা ভয় করি না। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে।
রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহীতে উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। এবার হবে কর্মসংস্থান। আমার নির্বাচনী ইশতেহারের প্রথম বিষয় থাকবে কর্মসংস্থান। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিসিক শিল্পনগরী-২ এর কাজ শেষ হয়েছে। এখন প্লট বরাদ্দের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চামড়া শিল্প পার্ক অনুমোদন দিয়েছেন। সেটির কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। বিসিক শিল্পনগরী-২ ও চামড়া শিল্প পার্কে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
শুরু থেকেই রাজশাহীর ভোটের মাঠে মেয়র লিটন ও নগর আওয়ামী লীগ সোচ্চার থাকলেও খোজ মিলছে না অন্য কোনো দলের । এরই মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মেয়র পদে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। তবে তারও অস্তিত্ব নেই রাজশাহী নগরে।
তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বিএনপির সঙ্গে গোপন আঁতাত করার চেষ্টা করছেন। যদিও বিএনপি রাজশাহীর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের কোনো খবর নেই তাদের কাছে। তবে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে না আসলে তাদের সহযোগীতা চাইবে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী। এ নিয়ে ভেতরে ভেতরে আঁতাতের চেষ্টাও চলছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী সিটি নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে ডামাডোল শুরু হয়েছে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলনও প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। এবার শুরু থেকেই নির্বাচনী প্রচারে সোচ্চার বর্তমান এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আর বর্তমান সরকারের অধিনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার গো ধরে আছে বিএনপি।


প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৩ | সময়: ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ