রাকসু ও সিনেট কার্যকরের দাবিতে রাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমাবেশ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : 

শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং রাকসু ও সিনেট কার্যকরের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটের আমতলা চত্বরে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশটির আয়োজন করে ‘রাকসু আন্দোলন মঞ্চ’। সমাবেশ থেকে দ্রুত রাকসু নির্বাচনের দাবি জানান বক্তারা।

 

 

 

সমাবেশে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খানের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আর রাজী। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তর। সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের মানুষের পাশাপাশি অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তরুণেরা। তাদের চিন্তার জগত, মত প্রকাশের জগত, মানুষ হিসেবে তাদের অস্তিত্ব একটা ভয়ঙ্কর হুমকির মুখে পড়েছে। সুতরাং এই তরুণদেরকেই এটার প্রতিবাদ করতে হবে। যে মানুষ নিজেকে সম্মান করে সে অবশ্যই অন্যদের সম্মান করে। সে কখনও অন্যায়ের সামনে, অবিচারের সামনে চুপ থাকতে পারে না। আশা করি এই আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন মানুষ তৈরি হবে।’

 

 

অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আজকে যদি রাকসু হয় তাহলে আমরা গুণগত মানের কতটা পরিবর্তন দেখবো? কিছু পরিবর্তন হয়তো আমরা দেখবো কিন্তু কাংখিত পরিবর্তন কি পাবো? আমরা কাংখিত ফল পাবো না। কেন পাবো না এই প্রশ্নটা আমাদের সবার খুঁজে বের করতে হবে। একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি আমরা এই ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে পারি তাহলে আমাদের কাজটা শেষ হয়ে যাবে। তবে এটির উপর আমরা যদি ঠিকমতো নজরদারি করতে না পারি তাহলে সেটি কাজে দিবে না। একটা ছাত্রসংসদ ততোক্ষণ কাজে আসবে যতোক্ষণ আমজনতা নজরদারি করবে।’

 

 

অধ্যাপক আ-আল মামুন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের স্কুল জীবন থেকেই মেরে ফেলা হয়। এক বস্তা বই তাকে মুখস্ত করতে হয় কারণ তাকে ফার্স্ট হতে হবে। প্রাইমারি স্কুল থেকে তাদের এ জার্নি শুরু হয়। যার ফলে তারা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে তখন তাদের মাথায় আর মগজ থাকে না। তাদের মাথাটা থাকে কাঁধের ওপরে কিন্তু তাদের মগজটা থাকে না। শিক্ষকদেরও একই অবস্থা। শিক্ষক ৫০ বছরের পুরনো একটা নোট পড়াচ্ছেন কিন্তু সেই শিক্ষক জীবনেও দুইটা বই কেনেন না, চিন্তা ভাবনা করেন না, যুক্তির কথা ভাবেন না। আর ছাত্রদের বলেন, এটা পড়ে আসতে হবে এবং আমি যেভাবে বলেছি ঠিক ওইভাবেই পড়ে আসতে হবে। কোনোভাবেই শিক্ষককে কনটেস্ট করা যাবে না। এই হচ্ছে আমাদের শিক্ষার চরিত্র। মুখস্থ করো এবং অনুগত থাকো।

 

 

 

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসুদ, ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক, ছাত্র অধিকার পরিষদ রাবি শাখার সভাপতি নাইমুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ। এসময়   বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

সানশাইন / শামি

 

 


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ | সময়: ১০:৫৩ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine