সর্বশেষ সংবাদ :

বাবা-মা নতুন সংসারে ব্যস্ত ‘নিরাপদ আশ্রয়’ চেয়ে ডিসির কাছে কিশোরীর আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার : বাবা-মা আলাদা আলাদা ভাবে নিজ নিজ সংসারে ব্যস্ত থাকায় এখন নিরাপদ আশ্রয় চেয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে দরখাস্ত দিয়েছেন লামিয়া খাতুন (১৩) নামের এক কিশোরী। গত সোমবার লামিয়া খাতুন ‘আশ্রয়ের জন্য আবেদন’ উল্লেখ করে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর দরখাস্ত দেন। ওই কিশোরী এখন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিসে চিকিৎসাধিন।
রাজশাহী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হাসিনা মমতাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘লামিয়া বর্তমানে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি রয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।
কিশোরী দরখাস্তে লিখেছেন, ‘তার নাম লামিয়া খাতুন। বাবা খোকন হোসেন ও রেখা বিবি। তাদের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুরে। ১০ বছর আগে তার বাবা-মা উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। তখন সে ছোট ছিল। তারা (বাবা-মা) উভয়েই এখন নতুন করে সংসার শুরু করেছে। মা নতুন সংসার ফরিদপুর আর বাবার নতুন সংসার চট্টগ্রামে। তারা কেউ আমাকে (লামিয়া) আশ্রয় দিতে রাজি নয়। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে নানির বাসায় থাকছিলাম। কিন্তু ৫ মাস পূর্বে আমার নানি গোলাম কবির নামে একজনের বাসায় কাজের জন্য আমাকে রেখে যায়। সেখানে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
আমাকে প্রায় সময় ইজ্জতহানীর চেষ্টা ও গায়ে হাত দেয়। বর্তমানে অসুস্থ হয়ে আমি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধিন। আমাকে আবার গোলাম কবীরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় আমি গোলাম কবিরের বাড়িতে যেতে চাই না। যদি জোরপূর্বকভাবে নিয়ে যায় তাহলে আমার জীবননাশের হুমকি আছে। এমতাবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল থেকে নিরাপদস্থানে আশ্রয় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে সে।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হাসিনা মমতাজ বলেন, লামিয়া জানিয়েছে সে গোলাম কবির নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসেবে থাকতো। গোলাম কবির নগরীর একটি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বলে শুনেছি। তবে কোন কলেজের শিক্ষক সেটা জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, মেয়েটি নির্যাতনের শিকার। মেয়েটিকে দেখে মনে হয়েছে খুব ভয় পেয়েছে। সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আছে। রামেকে চিকিৎসা শেষে মেয়েটিকে আমাদের হেফাজতে নেব। আর তার মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করব। এরপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে লামিয়া আর কোনোভাবেই যেতে চায় না গোলাম কবিরের বাড়িতে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল জানান, কিশোরী লামিয়ার আবেদন পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সমাজসেবা দফতরের কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২৩ | সময়: ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর