শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মতলুব হোসেন, জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে চলতি মৌসুমে কিটনাশক ছাড়াই দ্বিগুন গাজর চাষ হয়েছে। গত ২ বছর ধরে গাজরের দাম প্রায় একই রকম থাকায় গাজর চাষীরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। আক্কেলপুর উপজেলায় দিন দিন গাজর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেরার রুকিন্দিপুর ইউনিয়নের আউয়ালগাড়ি ও রোয়ার গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষক কৃষানীরা বাজারে বিক্রীর জন্য ক্ষেত থেকে গাজর তুলছেন। তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেল, গত বছরের তুলনায় এবার গাজর চাষ অনেক বেশি করেছেন। দামও বিগত বছর গুরোর তুলনায় লাভজনক হওয়াতে গাজর চাষীরা অনেকটা খুশি। গাজর চাষীদের দাবী তারা ক্ষেতে বালাইনাশক গ্রয়োগ ছাড়াই গাজর উৎপাদন করে থাকেন। এ জন্য অন্যান্য ঝুঁকিপুর্ণ ফসলের চাষ কমিয়ে গাজর চাষের দিকে ঝুঁকছেন বেশি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইমরান হোসেন ও উপ সহকারী কৃষি কর্তা রুবেল হোসেন আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের নতুন সময়কে জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে গাজরের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২গুন বেশি। রোগ বালাই কম থাকায় দিন দিন কৃষকরা গাজর চাষে উৎসাহিত বেশি হচ্ছেন।
আউয়াল গাড়ি গ্রামের গাজর চাষী শাহজালাল, দুলাল হোসেন, আজাহার আলী, রোয়ার গ্রামের আবু কালাম, মুনছুর রহমান, আব্দুল লতিফ, সহিদুল ইসলাম জানালেন, চলতি মৌসুমে প্রতিবিঘায় ৫৫ থেকে ৬০ মন হারে তাদের জমিতে গাজর উৎপাদনের আশা করছেন। বিগত বছরের মতো এবারও দাম কিছুটা বেশি পাচ্ছেন। প্রতিমন গাজর এখন ১ হাজার টাকা থেকে ১১’শ টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রী হচ্ছে।
বিঘাপ্রতি গাজর চাষ করতে বীজ সহ সব মিলিয়ে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা ব্যয় হয় চাষীদের। সর্বসাকুল্য খরচ বাদে গাজর চাষ করে চাষীরা প্রতিবিঘাতে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হওয়াতে তারা খুব খুশি।
এদিকে বিভিন্ন প্রকারের সবজি চাষের পাশাপাশি দেশের উত্তরবঙ্গের জেলা জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানাতে এবছর শিমের চাষ বেড়েছে। শিম চাষে সার, কীটনাশক ও লেবার খরচ অন্য সবজি চাষের তুলনায় কম হলেও লাভ অধিক। একারনে এলাকার অনেক চাষী শিম চাষে এগিয়ে আসছে। আগে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত স্থানে, উঠানে ঝাংলায় ও ছাদে গৃহিনীরা বিভিন্ন সবজি চাষ করত।
এখন কৃষকরাই নাইলন সুতা, জিআই তার এবং বাঁেশর খুটির (ঝাংলা) মাচায় চাষ করছেন করলা, লাউ, পটলের পাশাপাশি শিম। চাষীরা বলেন, অধিক বৃষ্টির ফলে জমিতে পানি জমে ফসলের গাঁয়ে দাগ ধরে ও পঁচে যায় এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অপরদিকে পঁচা ও দাগ ধরা ফসল বাজারেও দাম কম।
উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের চাম্পাতলী মাঠে উমর আলী ও আবু বক্কর-কে শিমের ক্ষেত পরিচর্যা করতে দেখা যায়। ৫ হাজার টাকা খরচ করে এক বিঘা জমিতে শিমের চাষ করেছে। সীমের গাছের (লতা) ডগা ফুলে ফলে ছেয়ে গেছে। ডগার গোড়ায় ছোট ছোট শিমও ধরেছে। কৃষক বক্কর বলেন, এই ঝাংলায় প্রথমে করলা চাষ করেছিলাম। করলার শেষের দিকে শিম চাষ করেছি ফুলও ধরেছে। শিমের দাম এখন ভাল কিছুদিনের মধ্যে বাজারে বিক্রয় করতে পারলে লাভ হবে এমন আশা তার।
মৌসুমের সুরুতে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা দরে, আর এখন দাম কমে প্রতি কেজি শিম ৩০-৩৫টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে আবু বক্কর জানান। এখন গ্রামের আনাচে কানাচে ছোট ছোট মাচা করে শিম চাষ করেছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন আমরা এখান থেকে বাড়ির খাওয়ার শিম পাই ও অতিরিক্ত শিম বাজারে বিক্রয় করি।