নদী ড্রেজিং এবং বাঁধ নির্মান সম্পন্ন হলে চারঘাট-বাঘা হবে দর্শনীয় স্থান : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নুরুজ্জামান,বাঘা :

রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা থেকে তিন-তিনবার নির্বাচিত সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, খুব শীঘ্রই চারঘাট-বাঘার নদী এলাকায় ১২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মান প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন নতুন করে শুরু হচ্ছে নদী ড্রেজিং এর কাজ। এই দু’টি প্রকল্প সম্পন্ন হলে অত্র এলাকার নদী হবে নান্দনিক তথা দর্শনীয় স্থান।

শনিবার (৩-ডিসেম্বর) বেলা ১২ টায় বাঘার গোকুলপুরে অনুষ্ঠিত “নদী ভাঙ্গন হতে রক্ষা প্রকল্পের ড্রেজিং কাজের শুভ উদ্বোধন’’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

 

 

 

 

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে প্রতি বছর কম-বেশি বন্যা হয়। এই বন্যার সময় নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়। এতে ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হওয়া সহ ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়ার আতঙ্কে রাত কাটান নদী এলাকার মানুষ। আমি তাঁদের কথা ভেবে চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর থেকে বাঘার গোকুলপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ঝুকিপূর্ন এলাকায় বাঁধ নির্মান এবং নদী ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি রেখে ছিলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি আমার কথা রেখেছেন। এ জন্য আমি তাঁর প্রতি চির কৃতজ্ঞ ।

 

 

 

তিনি বলেন, আমি এ অঞ্চলের মানুষের অতি মুল্যবান সম্পদ জমি রক্ষা, জীবনমান উন্নয়ন, কৃষি ও শিক্ষার কথা ভেবে ৭৫০ কোটি টাকা ব্যায়ে এ বৃহত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করি। এই বাঁধ এলাকায় চারটি টি-বাঁধ নির্মান সহ একাধিক বসার স্থান নির্মান এর মাধ্যমে নান্দনিক(স্পট) তৈরী করা হবে। যাতে করে ভ্রমন প্রিয় মানুষ গুলো নদী এলাকায় ঘুরতে এসে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। এ ছাড়াও এই নদীতে পর্যায় ক্রমে ১৫ টি ক্রসবার দেয়া হবে । এর ফলে ভাঙ্গন রোধ হবে। যার উপকার পাবে বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলের মানুষ।

 

 

শাহরিয়ার আলম বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশে যারা এক সময় চুরি,লুটপাট ও অর্থ আত্নসাৎ করেছে এখন তারই মিথ্যাচার করছে। আপনারা কোন মিথ্যাচারে কান দিবেন না।। খালেদা জিয়া বলেছিলো, আমাদের সরকার কোনদিনই পদ্মা সেতু নির্মান করতে পারবে না। আমরা মানুষের প্রয়োজন এবং চাহিদার কথা ভেবে সেটি বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছি। ওরা জানে গনতান্ত্রিক পন্থায় কি ভাবে মানুষ খুন করতে হয়। আপনারা জেনে খুশি হবেন , বর্তমানে পদ্মা সেতু থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি টাকা টোল উঠছে। ভারতের একটি পত্রিকায় লিখেছে , বাংলাদেশের মানুষের সক্ষমতা রয়েছে। সত্যিকার অর্থে তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। তাই ওরা দুই হাজার টাকা টোল দিয়ে সেতু পার হয়। এই দেশটি যে ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে করে ওরা একদিন উচ্চ আয়ের দেশে পরিনত হবে।

 

বাঘার মনিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শেখ রাসেল স্মৃতি প্রাইজমানি টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল খেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত হন এবং খেলোয়াড়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী –  প্রতিনিধি

 

 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের সমান উন্নয়ন কোন সরকারই করতে পারেনি। আমাদের সামনে আরো নতুন কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এ গুলো বাস্তবায়ন করতে হলে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। আপনরা তাঁর জন্য দোয়া করবেন এবং দেশের উন্নয়নে নিজ-নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করবেন।

 

এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জহিরুল ইসলাম প্রধান প্রকৌশলী উত্তর পশ্চিমাঞ্চল, শফিকুল ইসলাম তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রাজশাহী এবং চারঘাট উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম। এ ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাকুড়িয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুরর হমান ও রাজশাহী জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং অত্র এলাকার বাসিন্দা শামসুদ্দিন রিন্টু।

 

উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন, বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার,বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল , বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন, আড়ানী পৌর সভার মেয়র মুক্তার আলী, পাকুড়িয়া ইউনিয়ন আলীগের যুগ্ম-আহবায়ক নয়ন সরকার। বাঘার ৬ জন ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা এবং ইউনিয়ন আ’লীগের নেত্রীবৃন্দ সহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।

 

এদিকে উক্ত অনুষ্ঠানের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পাশ্বর্তী চারঘাট উপজেলায় দুটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করতে যান। সেখান থেকে ফিরে বিকেলে বাঘার মনিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শেখ রাসেল স্মৃতি প্রাইজমানি টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল খেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত হন এবং খেলোয়াড়দের মাঝে পুরুস্কার বিতরণ করেন। এ খেলায় সভাপতিত্ব করেন মনিগ্রাম ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান। উক্ত খেলায় টাইবেকারে ৫-৩ গোলের ব্যবধানে বাঘার হেলালপুর মুসার ঈদগা ফুটবল টুর্নামেন্টকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হন দুর্গাপুর ফুটবল একাদশ। এ খেলাটি হাজার-হাজার দর্শক উপভোগ করেন।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২২ | সময়: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine