আমবাগানে মাসকলাই চাষে বাড়তি আয়ের স্বপ্ন

সাপাহার প্রতিনিধি: দেশের আম উৎপাদনকারী অন্যতম শীর্ষ জেলা নওগাঁর সাপাহারে আমবাগানের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে মাসকলাই। মাসকলাইয়ের বীজ ডাল হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। ঐতিহ্যবাহী খাবার কলাইয়ের রুটিও তৈরি হয় মাসকলাই ডাল থেকেই। তাই মাসকলাই ডালের চাহিদা ও কদর রয়েছে বাজারে। মাসকলাই চাষে খুব বেশি পরিচর্যা বা খরচের প্রয়োজন পড়েনা। দু-একবার ভিটামিন আর কীটনাশক স্প্রে করলেই যথেষ্ট ফলে খরচও তেমন বেশী হয়না। যার ফলে অল্প খরচে বাম্পার ফলন এবং অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন আম উৎপাদনকরী সাপাহার উপজেলার চাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, উপজেলায় এবারে প্রায় ২১০ হেক্টর আম বাগানে গাছের ফাঁকে ফাঁকে সাথী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে মাসকলাই। প্রতি হেক্টর জমিতে মাসকলাই ডাল উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে দেড় থেকে দুই মেট্রিক টন। যার উৎপাদন খরচ প্রতি বিঘা জমিতে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ উপজেলায় মাসকলাই এর বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষী ও উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। এতে করে প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে উৎপাদিত ফসলের বাজার দর হিসাব মিলাতে গেলে, দেখা যায় লাভের অংক দাঁড়াবে কয়েকগুণ বেশী। তাই এই এলাকায় আম বাগানে গাছে ফাঁকে মাসকলাই চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।
শনিবারে সরেজমিনে উপজেলার সাপাহার সদও, গোয়ালা, তিলনা ও শিরন্টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে মাসকলাই চাষের এমন চিত্র।
কাশিতাড়ার মাসকলাই চাষি আকবর আলী, পিছলডাঙ্গা গ্রামের হাবিবুর রহমান, তুলশীপাড়ার আব্দুল কাদের জানান, আম বাগানে গাছের ফাঁকে ফাঁকে বাড়তি ফসল হিসেবেই চাষ করি মাসকলাই। এই ফসল চাষে অধিক পরিচর্যার ঝামেলা নাই। আবার অল্প খরচে আয় আসে বেশি। তাই কছেশ বছর থেকেই মাসকলাই চাষ করে আসছি। এবারও তারা প্রত্যেকে ৫/৬ বিঘা করে জমিতে চাষ করেছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ফুল ফল ভালো হয়েছে। আশা করছি গত বছরের থেকে এবার বেশি ফলন হবে এবং বিঘা প্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা খরচ করে প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৭ মণ পর্যন্ত কলাই উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচেছ। বর্তমানে মাসকলাই বাজারে ৩-৪ হাজার টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে সাপাহার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুনিরুজ্জামান টকি জানান, এবার উপজেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হেক্টর প্রতি ধরা হয়েছে দেড় থেকে দুই মেট্রিক টন। আর গত বছর চাষ হয়েছিল ৬৫ হেক্টর জমিতে। কৃষকদের আমরা মাসকলাই চাষে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা প্রদান করে আসছি। মাসকলাই মাড়াইয়ের পর কৃষকের নায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারলে সামনের বছর মাসকলাই চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২২ | সময়: ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ