সর্বশেষ সংবাদ :

দ. আফ্রিকাকে গুঁড়িয়ে সমতা টানল ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক: জেমস অ্যান্ডারসনের অ্যাঙ্গেলে খানিকটা ভেতরে ঢোকা নিচু ডেলিভারিতে ব্যাট নামিয়েও বাঁচতে পারলেন না ডিন এলগার। কিছুক্ষণের মধ্যে পতন আরও দুই উইকেটের। শুরুর সে ধাক্কা সামলে কিগান পিটারসেন ও রাসি ফন ডার ডাসেন ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস অবশ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদেরকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে সমতা টানল ইংল্যান্ড।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনেই জিতে নিল স্বাগতিকরা। দাপুটে পারফরম্যান্সে সফরকারীদের হারাল ইনিংস ও ৮৫ রানে। তিন টেস্টের সিরিজ এখন ১-১ সমতায়। লর্ডসে প্রথম টেস্ট ইংল্যান্ড হেরেছিল ইনিংস ও ১২ রানে। পাল্টা ইনিংস ব্যবধানে জিতে প্রতিশোধ নিল তারা।
ইংলিশদের আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে দক্ষিণ আফ্রিকার করতে হতো ২৬৪ রান। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে তারা গুটিয়ে যায় স্রেফ ১৭৯ রানে। প্রথম ইনিংসেও ব্যর্থ ছিল তাদের ব্যাটিং, করতে পারে মাত্র ১৫১ রান। একমাত্র ইনিংসে বেন স্টোকস ও বেন ফোকসের সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ড ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ৪১৫ রান নিয়ে।
প্রথম ইনিংসে এক উইকেট পাওয়া অলিভার রবিনসন জ্বলে ওঠেন এদিন। ৪৩ রান ৪ উইকেট নেন সাত মাস পর টেস্ট খেলতে নামা এই পেসার। দুই ইনিংসেই তিনটি করে উইকেট নেন অ্যান্ডারসন। ৯৫১ উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি পেসারের রেকর্ডটি এখন তার। ভেঙে দেন অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাকগ্রার (৯৪৯ উইকেট) রেকর্ড।
ব্যাটে-বলে নিজেকে মেলে ধরে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন বেন স্টোকস। দুই ইনিংসেই এই অলরাউন্ডার উইকেট নেন দুটি করে। একমাত্র ইনিংসে দলের বিপদে করেন ১০৩ রান। কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৩ রান নিয়ে শনিবার দিন শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে শুরুতেই আঘাত হানেন অ্যান্ডারসন। বোল্ড করে দেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক এলগারকে। আরেক ওপেনার সারেল এরউইয়াকে বেশিদূর যেতে দেননি রবিনসন।
অ্যান্ডারসনের বলে পিটারসেনকে কট বিহাইন্ড দেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ৬ রানে থাকা ব্যাটসম্যান। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এইডেন মারক্রামকে ফিরিয়ে দেন স্টুয়ার্ট ব্রড। অনেক বাইরের বল তাড়া করে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন মারক্রাম।
৫৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলের হাল ধরেন পিটারসেন ও ফন ডার ডাসেন। দৃঢ়তার সঙ্গে কাটিয়ে দেন তারা প্রথম সেশনের বাকি সময়। মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকেন দুইজন। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তারা। জমে যাওয়া এই জুটির প্রতিরোধ দ্বিতীয় সেশনেও ভাঙতে পারেনি ইংল্যান্ড।
চা বিরতির আগের দ্বিতীয় ওভারে অবশ্য একটি সুযোগ পেয়েছিল তারা, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। স্টোকসের বলে কট বিহাইন্ড হয়েছিলেন ৪১ রানে থাকা ফন ডার ডাসেন, অথচ কেউ আবেদনই করেননি! জীবন পাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ফন ডার ডাসেনও (৫ চারে ৪১)। তৃতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই তাকে কট বিহাইন্ড করে দেন স্টোকস। ভাঙেন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠা ২৬১ বল স্থায়ী ৮৭ রানের জুটি।
পরের ওভারে ইংলিশ অধিনায়ক নেন আরেক থিতু ব্যাটসম্যান পিটারসেনের উইকেট। তিনিও ফোকসের গ্লাভসে ধরা পড়েন ১৫৯ বলে ১ চারে ৪২ রান করে। সাইমন হার্মারকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন অ্যান্ডারসন। এরপর বাকিরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মাঝে। স্রেফ ৭ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। লন্ডনের দা ওভালে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট।


প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২২ | সময়: ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ