বাগমারায় স্কুলের গাছ কাটা নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: রাজশাহীর বাগমারায় প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে স্কুলের গাছ কর্তনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে ৩নং দ্বীপপুর ইউনিয়নের মিরপুর হাইস্কুল সংলগ্ন সরকারি রাস্তার পাশে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সরকারি রাস্তারার ধারে কিছু মেহগনি, আম সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। সেই গাছগুলি মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মকলেছুর রহমান দুলালের যোগসাজশে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
ছায়া ও শোভা বর্ধনকারী গাছগুলো কেটে সাবাড় করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্বীপপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হাসিনা বানু জানায়, গাছগুলি কেটে ফেলায় পরিবেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া এবং শিক্ষার্থীদের সমস্যায় পড়তে হবে।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আফজাল হোসেন, আকবর আলী জানিয়েছেন স্কুলের গাছ বিক্রয় বা কর্তনে কোন রেজুলেশন হয় নাই। আমাদের কিছু জানানো হয়নি।
এ ঘটনায় স্থানীয় মোফাজ্জল হোসাইন টুটুল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর বৃহস্পতিবার রাতেই সভাপতি মকলেছুর রহমান ও তাঁর ছেলে অভিযোগ দায়েরকারী টুটুলের উপর হামলার চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানান, সোহরাব হোসেন তোতা।
নথি অনুযায়ী প্রধান বিবাদী করা হয়েছে দ্বীপপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান দুলাল, মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার, শামসুল ইসলাম, হবির, টুকু, সম মেম্বার, এসাহাক কে।
সূত্র জানায়, গাছগুলো বাগমারা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাস্তায় হওয়ায় এলজিইডি প্রকৌশলী খলিলুর রহমানকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাটা, অর্ধকাটা গাছের মূল্য প্রায় দুই লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার এর মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, ওই সময় স্কুলের কাজে আমি ভবানীগঞ্জ ছিলাম।
গাছগুলি স্কুলের না কী সরকারি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এগুলো স্কুলের গাছ হিসাবে জানি । কে বা কারা বিক্রয় করেছেন এমন প্রশের উত্তরে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
তবে তিনি এক পর্যায়ে বলেন, সংগত কারণে আমি বাগমারা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে এসেছি। তবে যারা কেটেছে তাদের নামে অভিযোগ দিয়েছি। ওরা তো শ্রমিক আসল বিক্রেতা-ক্রেতা কে? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন প্রধান শিক্ষক।
বাগমারা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী খলিলুর রহমান জানান, প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এর সাথে জড়িত। এ বিষয়ে বাগমারা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সরজমিন উপস্থিত হলে, থানার এস.আই নাজমুল হোসেনের তদারকিতে বিবাদমান কর্তনকৃত গাছ ও ডালপালা ভ্যানযোগে স্থানীয় মেম্বারদের জিম্মায় দ্বীপপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে রাখতে দেখা গেছে।
বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। গাছগুলো কে কেটেছে বা কে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা সনাক্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৪ | সময়: ২:২৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ