বরেন্দ্রে প্রথম জিরা চাষ

সেলিম সানোয়ার পলাশ, প্রেমতলী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সাদা জিরার চাষ শুরু হয়েছে। মাটি ও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ অঞ্চলে জিরার চাষে সফলতার মুখ দেখবে বলে দাবি করেছেন উপজেলা কৃষি বিভাগরে কর্মকর্তারা।
এবছর প্রথমবার গোদাগাড়ী উপজেলায় ৩ জন কৃষক ১ বিঘা জমিতে ৩ টি প্রদর্শনি প্লটে জিরার আবাদ করেছে। কৃষকরা আশা করছেন, জিরা চাষ করে লাভবান হবেন তারা।
চাষীরা জানিয়েছে, কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া, জমির সহজলভ্যতা, অনুকূল আবহাওয়া, চাষ উপযোগী মাটি ও কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগীতার থাকায় এবার প্রথম জিরা চাষ করেছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার জানান, জিরা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকের প্রশিক্ষণ দেওয়ায় কৃষকরা সঠিকভাবেই এর চাষাবাদ করছেন। এবছর এ উপজেলায় ৩টি প্লটে জিরার চাষ পরিদর্শন করেছি। গোদাগাড়ীতে জিরা চাষকারী কৃষকরা হলেন, মাটিকাটা ইউপির মাজহারুল ইসলাম, বাসুদেবপুর ইউনিয়নের আতাউর রহমান, গোগ্রাম ইউনিয়নের মোস্তফা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এ উপজেলায় বেনিপুর, কাকনহাট কাদিপুর, গোগ্রাম এলাকায় বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে জিরার চাষ হয়েছে। চাষীরা তাদের ক্ষেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জিরা চাষি মাজহারুল ইসলাম জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় মসলা গবেষণা কেন্দ্র বগুড়ায় জিরা চাষের জন্য একদিনের প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছি। প্রশিক্ষণ গ্রহন করার পর বেনিপুর এলাকায় ১০ শতক জমিতে জিরা চাষ করেছি। অফিস থেকে বীজ দিয়েছিল। অন্যান্য সার্বিক সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ মসলা গবেষণা কেন্দ্র।
১০ শতক জমিতে জিরা চাষ করতে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে আমার জমিতে ঘাস বেশি হওয়ায় নিড়ানি খরচটা একটু বেশী হয়ে গেছে। তা না হলে খরচ আরো কম হতো। জমিতে জিরার গাছ ভাল হয়েছে। ভরপুর ফুল এসেছে গাছে। এই শীত ও ঘনকুয়াশার হাত থেকে রক্ষা পেতে মসলা গবেষণা কেন্দ্রের পরামর্শ অনুযায়ী ২ দিন পরপর জিরার জমিতে স্প্রে করতে হচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে আশা করছি ১ মণ ফলন পাব।
আরেক জিরা চাষি আতাউল রহমান বলেন, আগে টবে জিলা চাষ করেছিলাম। তাতে সফল হয়েছি। কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এবার জমিতে প্রথম জিরা চাষ করেছি। কৃষি অফিস থেকে বীজ দিয়েছিল। আবাদে খরচের জন্য ৪ হাজার টাকা দিয়েছে কৃষি অফিস। ১০ শতক জমিতে জিরা চাষ করার কথা থাকলেও প্রায় ৮ শতক জমিতে জিরার চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৭ হাজার টাকা। জমিতে জিরার গাছ ভালো হয়েছে। প্রতিটি গাছ ভর্তি করে ফুল এসেছে। আশা করছি ফলন ভালো পাবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, গোদাগাড়ীর মাটি ও আবহাওয়া জিরা চাষের অনুকূল। মশলা হিসেবে জিরা বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য একটা সম্ভাবনাময় ফসল। আগামীতে এই মশলা ফসলটি ছড়িয়ে দেওয়া হবে কৃষকদের মাঝে। এতে মশলার আমদানি নির্ভরতা কমবে। কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হবে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৪ | সময়: ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ