সার্বক্ষণিক শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন : আসাদ

স্টাফ রিপোর্টার : দিন নাই রাত নাই, সার্বক্ষণিক শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ। রোববার বিকেলে রাজশাহীর পবা উপজেলার দর্শনপাড়া শহীদ কামারুজ্জামান কলেজ মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যে সমস্ত কাজ করেছেন এতে আমরা গর্বিত মানুষ মনে করি। দিন নাই রাত নাই, সার্বক্ষণিক শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন। আমরা আওয়ামী লীগ করি, আমরা মাথা উঁচু করে বলতে পারি, আমাদের শেখ হাসিনা বিশ্বের নন্দিত রাষ্ট্রনায়ক। পৃথিবীর পাঁচজন শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে শেখ হাসিনা একজন। তার সৈনিক আপনাদের সামনে এসেছি। আমরা আপনাদের ৫ বছর সেবা দিবো, সেজন্য কি এক ঘণ্টা সময় দিবেন না? সেই এক ঘণ্টার সময় নিয়ে ৭ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন।
তিনি আরও বলেন, মা-বোনদের জন্য আমাদের মায়েদের জন্য শেখ হাসিনার প্রথম যে অবদান সেটি হলো, সন্তানের নামের আগের পরিচয় হতো পিতার নামে। আর এখন সন্তানের নামের সাথে আগে মায়ের নাম থাকে, পরে পিতার নাম। মা জাতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে সম্মান, সেই সম্মানের কারণেই তো মা-বোনেরা আগামীতেও নৌকায় ভোট দিবেন।
পবা-মোহনপুনের নৌকার মাঝি আসাদ বলেন, মা-বোনদের নাড়িছেঁড়া ধন সন্তান যখন স্কুলে যায়, সেই স্কুলে যাওয়ার পর শেখ হাসিনাই সেই সন্তানদের শিক্ষা উপবৃত্তির টাকাটা দেন। সেই টাকা তো শুধু আওয়ামী লীগ করা মা-বোনের সন্তানরা পান না, সবাই পায়। আপনার সন্তানের জন্য আপনার মোবাইলে যথা সময়ে টাকা পাঠিয়ে দেন। এজন্যেই তো আপনাদের কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত। সেই কৃতজ্ঞতার জায়গা থেকে নৌকায় ভোট চাই।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ বলেন, কোনো এক সময় সারের জন্য কৃষক ভাইদের জমির দলিল জমা দিতে হয়েছিল। শেখ হাসিনা সেসময় দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছিলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোনোদিন যদি আমাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নিয়ে যায়, কৃষি উপকরণের জন্য কারো দরজায় দরজায় যেতে হবে না। যেখানে যা প্রয়োজন সেখানে তা সরকারের পক্ষ থেকেই পৌঁছে দেওয়া হবে। আপনারা এই সরকারের দ্বারা উপকৃত হয়েছেন সেই কারণেই এই সরকারকে সহযোগিতা করা আপনার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে মনে করি।
আসাদ বলেন, জানুয়ারির এক তারিখে স্কুলে আপনার সন্তানরা যখন নতুন ক্লাসে নতুন বই হাতে বাড়ি ফিরে, তখন সন্তানের হাসিমাখা মুখ নিশ্চয়ই আপনাকে আনন্দিত করে। এই বই শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সন্তানরা পায় নাকি এ অঞ্চলের সমস্ত মানুষের সন্তানরা পায়? যদি সত্যিকার অর্থেই এই বইটি সমস্ত সন্তানরা পেয়ে থাকে, সন্তানের হাসিমাখা মুখ দেখে যদি আনন্দিত হন, সেই আনন্দের পেছনে শেখ হাসিনার হাত আছে। সেই অবদানের জায়গায় দাঁড়িয়ে আপনাদের বিবেকের রায়টি নৌকা প্রতীকে চাই।
সরকারি উপকারভোগীদের উদ্দেশ্যে আসাদ বলেন, একবার নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন তো, শেখ হাসিনার শাসনামলে ভালো আছেন না খারাপ আছেন? আপনাদের অনুরোধ করে গেলাম, এবারের ভোটটি যারা দিবে ওই স্লিপে একটি টিক চিহ্ন দেওয়া থাকবে কে কে উপস্থিত হয়েছেন ভোট কেন্দ্রে। আর যারা উপকারভোগী যদি ভোট কেন্দ্রে না যান, আপনি যাকে খুশি তাকে ভোট দেন সেটি নিয়ে আমাদের কোনো কথা নাই। আমরা আওয়ামী লীগের মানুষ, নৌকার ভোট চাইতে এসেছি। কিন্তু আপনার কাছে দাবি রইলো, যেহেতু এই রাষ্ট্রের উপকারের সহযোগিতা আপনি গ্রহণ করছেন, আপনাকে অবশ্যই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে। যাকেই দেন, আমরা চাইবো নৌকায় দেন, যদি নৌকা পছন্দ না হয় যাকে খুশি তাকে দেন।
করোনা সংকটের কথা স্মরণ করিয়ে আসাদ আরও বলেন, যখন করোনার সময় গোটা পৃথিবী অবরুদ্ধ। গোটা পৃথিবী বলছে কোটি কোটি মানুষ মরবে। গোটা বাংলাদেশসহ সমস্ত মসজিদ বন্ধ, পবিত্র কাবা শরিফ বন্ধ, মসজিদে নববীতেও তালা। যদি কোনো বাড়িতে করোনা রোগী পাওয়া যায় সেই এলাকায় লাল পতাকা উড়িয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হতো। পাড়ার মানুষ কাউকে বের হতে দেয় না, সন্তান মরলে পিতা যায় না, পিতা মরলে সন্তানরা এগিয়ে যেতে পারে না। এমন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে বললেন, ভয় পাওয়ার কারণ নাই। আল্লাহ সহায় আছেন। আমি কথা দিচ্ছি, বিজ্ঞানীরা করোনার বিরুদ্ধে ঔষধ আবিষ্কার করার চেষ্টা করছেন। যেদিন করোনার ঔষধ আবিষ্কার হবে, পৃথিবীর সমস্ত ধনী দেশ সেই ঔষধ পাবে, আমি কথা দিলাম একই সময় ওই ঔষধ বাংলাদেশে নিয়ে আসবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই কথা রেখেছেন। সেই টিকা কি শুধু আওয়ামী লীগের কর্মীরা গ্রহণ করেছে, না ১৮ কোটি জনগণ দিয়েছে? শুধু এক ডোজ, দুই ডোজ, তিন ডোজ নয়, কেউ কেউ চার ডোজও টিকা গ্রহণ করেছেন বিনামূল্যে। তাহলে তো আপনার বিবেকের কাছে আমরা নৌকা প্রতীকে ভোটটি চাইতেই পারি।
দর্শনপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রাজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শান্তের সঞ্চালনায় নির্বাচনী সভায় উপস্থিত ছিলেন পবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী, সাধারণ সম্পাদক ও নওহাটা পৌরসভার মেয়র হাফিজুর রহমান, পবা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরজিয়া বেগম, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান বাবু, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক ফারুক হোসেন ডাবলু, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাবেক সভাপতি রমজান আলী, রাজশাহী জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আলী আজম সেন্টু প্রমুখ।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৪ | সময়: ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ