সহিংসতা খুব বেশি হয়নি, দাবি সিইসির

সানশাইন ডেস্ক: নির্বাচনের আগে সহিংসতায় অন্তত দুজনের মৃত্যুর খবর এলেও ‘খুব বেশি ঘটনা ঘটেনি’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক আস্থার সংস্কৃতি গড়ে না উঠলে, ভোটে সহিংসতা কিছুটা থেকে যাবে।”
৩০০ আসনে প্রায় ১৯০০ প্রার্থী এবার ভোটের প্রচারে তৎপর। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে সমাঝোতা আর জোটের হিসাব নিকাশের মধ্যে নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের লড়াই হবে প্রায় দেড়শ আসনে। এর মধ্যে শতাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন, যারা আওয়ামী লীগের নানা পর্যায়ের দলীয় পদধারী। নিজেদের শক্তি আর জনপ্রিয়তা দেখাতে গিয়ে এরই মধ্যে গোটা পঁচিশেক আসনে প্রতিপক্ষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, প্রচারে বাধা দেওয়া, মারধর, হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতার তথ্য এসেছে সংবাদমাধ্যমে। পিরোজপুর ও মাদারীপুরে দুজনের মৃত্যুও হয়েছে।
ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় এ পর্যন্ত আড়াইশর বেশি শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী অপরাধের জন্য এখন প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “শাসক দলের প্রত্যেকটা নির্বাচনী মাঠে আমরা ঘুরে বেড়িয়েছি। প্রার্থীদের সাথে, প্রশাসনের সাথে আমরা সভা করেছি। তাদের কাছ থেকে আমরা খুব বেশি অভিযোগ পাইনি। প্রশাসনের ওপর তাদের আস্থা রয়েছে।
“কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা বা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পোস্টার ছেঁড়া- এগুলো হয়েছে। কিন্তু মোটা দাগে খুব বেশি ঘটনা হয়েছে বলে মনে হয় না। সহিংসতা একেবারেই হয়নি সে কথাটা বলছি না।” প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আরও কয়েকটা দিন আছে, আমরা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রাখছি। তারা যেন এটা কঠোরভাবে দমন করে। একটা সময় প্রচারণা বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর ভোটের দিন আসবে। ভোটের দিন আইনকানুন মেনে যদি ওটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলেই ভোটাধিকার প্রয়োগ হবে।”
তবে ক্ষমতাসীনদের আচরণবিধি ভাঙার বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি সিইসি। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। এরপর ৭ জানুয়ারি হবে ভোটগ্রহণ। সিইসি বলেন, “কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট থাকবেন। সেখানে বাইরের আনঅথোরাইজড পারসন যেন প্রবেশ করতে না পারে। আমরা এখানে জোর দিচ্ছি। গণমাধ্যম যদি কোনো অনিয়মের ছবি সম্প্রচার করতে পারে, আমরা তাকে স্বাগত জানাব। এভাবে একটা দৃশ্যমানতার মধ্য দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা যদি ফুটে ওঠে, তাহলে এর ক্রেডিবেলিটি বেড়ে যাবে। এবং রং পারসেপশন হওয়ার সুযোগ থাকবে না। আমরা আশাবাদী।”
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার আগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি হাবিবুল আউয়াল। বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, “সহিংসতার পথ থেকে বের হয়ে এসে অহিংস পদ্ধতিতে নির্বাচন করা সম্ভব, সেই লক্ষ্যে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকা উচিত। যারা নির্বাচন করবেন, তাদেরকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে সহিংসতার পথ থেকে সরে এসে অহিংস পদ্ধতিতে ভোটারদের অনুপ্রাণিত করার প্রক্রিয়া তারাও চালাবেন, আমরাও বলেছি তাদের সাথে কাজ করব।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩ | সময়: ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ