সর্বশেষ সংবাদ :

বিভ্রান্তির জালে পবা-মোহনপুরের মানুষ আর পা দিবে না: আসাদ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেছেন, শেখ হাসিনার মাধ্যমে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আপনাদের বিবেকের রায়টি নৌকা মার্কায় চাই। রোববার দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ানে ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, নারী সমাজের জন্য শেখ হাসিনা কী করেন নি? আগে সন্তানের নামের সাথে শুধু বাপের নাম ছিল। এখন কি তাই হয় নাকি মায়ের নামও যোগ হয়? এই মায়ের নাম যোগ কে করেছে, শেখ হাসিনা করেছে। সেজন্যই তো শেখ হাসিনার জন্য মানুষের কাছে ভোট চাওয়া উচিত। ভোট চাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের আলাদা একটা অধিকার আছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যখন বয়স্ক ভাতা দেয়, অন্তঃসত্ত্বা ভাতা দেয়, করোনার সময় করোনার টিকা দিয়েছিলেন তখন কিন্তু দল দেখেননি। সবমিলিয়ে দল না দেখা মানুষ জনবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারা যদি এতটুকু উপকৃত হয়ে থাকেন তবে তার বিবেকের রায়টি নৌকা প্রতীকে চাই।
আওয়ামী লীগ মনোনীত এমপি প্রার্থী আরও বলেন, ‘আর কয়েক দিন পরেই জানুয়ারির প্রথম দিন নতুন বই পেয়ে আপনার সন্তানরা যখন আনন্দিত হয়ে বাড়ি ফিরবে, তাদের এই হাসির পেছনে শেখ হাসিনার অবদান আছে। আমাদের সময়েও কেউ নতুন বই পাই নি। পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রে কোমলমতি ছেলে-মেয়েরা নতুন বই পায় না। সেই বই কি শুধু আওয়ামী লীগের নেতাদের সন্তানরা নেয়? শেখ হাসিনা কিন্তু তখন কোনো দল দেখে না। এই কারণেই আপনার বিবেকের রায়টি নৌকায় চাই’।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসাদ বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে যদি জেতাতে চান তাহলে ভোট দিতে হবে ৫০শতাংশ এর উপরে। আমি যদি জিতে যাই আর শেখ হাসিনা যদি হেরে যায় তাহলে তো হলো না। আমি চাই, আমি যদি হেরেও যাই তবুও শেখ হাসিনা জিতুক। তাই আপনাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান আপনারা যারা আছেন সবাই যদি পরিবারের লোকজন, আত্মীয় স্বজনসহ ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিবেন’।
মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সভাপতি বেগম আখতার জাহান।
হরিয়ান ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সুলতানা রাজিয়ার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান বাবু, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক ফারুক হোসেন ডাবলু, মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিফা আরা কামাল, রাজশাহী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আকতার মিতা, পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক নুর হোসেন, হরিয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেবর আলী প্রমুখ।
এদিকে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মাঠ ও পারিলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত পৃথক নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব জানান।
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, যারা বলে ভোট কেন্দ্রে যাবেন না, তারা বাংলাদেশের বিরোধীতা করছে। যারা বলবে আসাদ তো এমনিই পাস, গেলেই কী আর না গেলেই কী, আসাদ পাস এটি যদি সত্যি হয় তবে শেখ হাসিনাকে পাশ করতে দিতে হবে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতিতে। এখন আপনারাই বিবেচনা করবেন, শুধু আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আমাকে বিজয়ী করবেন নাকি বাংলাদেশের সম্মানও বৃদ্ধি করবেন।
তিনি আরও বলেন, আমি ঐক্যের বাতায়নে সামনে চলতে চাই। আমরা আওয়ামী লীগ এক কাতারে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সামনে পথ চলতে চাই। যে শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বনন্দিত হয়েছেন, সেই শেখ হাসিনাকে আবারও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করা হয়েছে।
যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না তাদের বিবেকের কাছে দাবি রেখে গেলাম, আপনার দলের মন ভাঙ্গা নেতাকর্মীরা কী অবস্থায় আছে একবার কি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন? শেখ হাসিনা আহ্বান করেছিলেন, পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাংলাদেশ উপহার দিবো। পৃথিবীর সমস্ত দেশের পর্যবেক্ষকরা এসে এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
কিছুদিন আগেও যারা আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, সংগ্রামের নামে শেখ হাসিনাকে অপমান করার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনাই আমেরিকার দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, আপনার দেশে কত পার্সেন্ট মানুষ ভোট দিতে আসে? বাংলাদেশে আসুন, দেখে যান, বাংলাদেশের মানুষ ৭ তারিখে উৎসব উৎসব মনোভাব নিয়ে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যাবে।
সমাবেশের উত্তাল জনগণের কাছে দাবি রেখে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বলেন, আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী ৭ তারিখে আওয়ামী লীগ ও নৌকার বিজয় ঘটাবোই ঘটাবো। বিভ্রান্তির জালে পবা-মোহনপুরের মানুষ আর পা দিবে না। যেদিকেই যাই সারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনার উন্নয়ন আর উন্নয়ন। পবার মানুষ নিজ চোখেই দেখছেন তাদের এলঅকার কী উন্নয়ন হয়েছে।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি এ কথা সত্য, আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কথাও চরম সত্য। আমি মানুষ হিসেবে মানুষের মূল্যায়ন করি। যে যে দলই করুন না কেন আমার কাছে মানুষ হিসেবে আপনি কোনোদিন অপমানিত হবেন না। আমি রাজনীতি করি সম্মান অর্জনের জন্য অর্থ উপার্জনের জন্য নয়। সেই জন্যই এই বড়গাছিবাসীর বিবেকের কাছে অনুরোধ রেখে গেলাম, বড়গাছিকে মাদক, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও রাহাজানিমুক্ত করতে চাইলে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে।
আসাদ বলেন, জানুয়ারি মাসের এক তারিখে আপনার সন্তান স্কুলে নতুন বই পায়। নতুন বই পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়, সেই আনন্দের পেছনে শেখ হাসিনার হাত আছে। আমাদের রেল সেতু নিচ দিয়েই যায় না, উপর দিয়েও যায়। বাস-ট্রাক শুধু সড়ক দিয়েই যায় না, নদীর তল দিয়েও যায়, ২/৩ তলা ভবনের উপর দিয়েও যায়। পৃথিবীর কোনো মুসলিম রাষ্ট্রনায়ক পারে নি ৫৬০টি মসজিদ তৈরি করতে, শেখ হাসিনা করেছে। তাই আপনার ভোটের প্রতি আওয়ামী লীগের কর্মীর হক আছে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩ | সময়: ৪:৪০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ