নাটোরে যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার রায় : রাজশাহীর আদালতে জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতাকর্মীর যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার : নাটোরের লালপুরে যুবলীগ নেতা খায়রুল ইসলাম হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতাকর্মীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার রাজশাহী বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহা. মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর ৫৪ জন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আসামিরা সবাই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত।
দণ্ডিত আসামিরা হলেন- লালপুর উপজেলার পুকুরপাড়া চিলান গ্রামের কুদ্দুস প্রামানিকের ছেলে সানা প্রামানিক, সেকেন্দারের ছেলে করিম ও খলিল; মো. বানুর ছেলে মতি সরদার, তৈয়ব আলীর ছেলে মকলেছ সরদার, মকলেছের ছেলে মহসিন, রুস্তম আলী প্রামানিকের ছেলে রানা, ফরজের ছেলে আনিসুর, লুৎফর প্রামানিকের ছেলে রাজ্জাক, শাহজাহানের ছেলে জার্জিস, কদিম চিলান গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম আজাদ প্রিন্স, আন্দারুর ছেলে মো. কালাম ও মাজদারের ছেলে মিজানুর রহমান। তারা সবাই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, আদালত ১৩ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও তিনমাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়। এই রায়ের পরে আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কাদিমচিলান বাজারের বাসস্ট্যান্ডের কাছে মিছিল বের করে। আসামিরা গুলিবর্ষণ করে এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে তারা পুকুরপাড়া চিলান গ্রামে যুবলীগ নেতা খাইরুল ইসলামের চাচা আবদুল জলিলের বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের আক্রমণ করে। এসময় তারা কাদিমচিলান ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এ নিয়ে সেদিনই নিহত খাইরুলের ভাই শাহীনুর রহমান লালপুর থানায় ৬০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পরে ২০১৪ সালে পুলিশ তদন্ত করে ৬৭ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
তবে এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে নিহত খাইরুল ইসলামের ছেলে জুবায়ের ইসলাম বলেন, ‘মামলাটি হাইকোর্টে নিয়ে দীর্ঘদিন এর বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। একপর্যায়ে নথিপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা বহু কষ্টে নথি জোগাড় করে আবার মামলাটি সক্রিয় করি। দীর্ঘদিন পর রায় হলো, কিন্তু সবার সাজা হলো না। অথচ দিনদুপুরে সবার চোখের সামনেই আমার বাবাকে ৬০-৭০ জন আসামি কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। তাই এ রায়ে আমরা খুশি নই। উচ্চ আদালতে আপিল করব।’


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৩ | সময়: ৬:২২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ