বাঘায় কৃষি বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে নবান্ন উৎসব

নুরুজ্জামান,বাঘা :
বাংলা বছরের অগ্রাহায়ন মাসে নতুন ধান কেটে কৃষকরা যে পিঠা-পুলির উৎসব করেন তাকেই নবান্ন উৎসব বলা হয়। নবান্ন উৎসবের সাথে মিশে আছে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐহিত্য ও সংস্কৃতি। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিদের পরিচয় পাওয়া যায় এই নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে। অগ্রাহায়ণের শুরু থেকেই আমাদের গ্রাম বাংলায় চলে নানা উৎসব-আয়োজন। নতুন ধান কাটা আর সেই সাথে প্রথম ধানের অন্ন ও হরেক রকম পিঠা-পুলি খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই নবান্ন উৎসব। বর্তমানে এটি জাতীয় উৎসবে পরিনত হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বাঘা কৃষি অধিদপ্তরের আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর)উপজেলার হাবাসপুর মাঠে কৃষকের সাথে সরকারি কর্মকর্তাদের ধান কাটা ও নানা রকম পিঠা খাওয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে নবান্ন উৎসব ।

সকাল ১১ বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে বাঘার মনিগ্রাম ইউনিয়নের হাবাসপুর মাঠে এই নবান্ন উৎসব পালিত হয়। সেখানে অত্র এলাকার কৃষকদের সাথে ধান কাটায় অংশ গ্রহন করেন বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার, বাঘা কৃষি অফিসার শফিউল্লা সুলতান,উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মোহা: জুয়েল আহাম্মেদ , স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আসাদুজ্জামান,শিক্ষা অফিসার আ.ফ.ম হাসান ও প্রানী সম্পাদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সহ উপজেলার সকল দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা বৃন্দ এবং মনিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম।

ধান কাটা শেষে হরেক রকম পিঠা খাওয়া সহ এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার বলেন, আমাদের দেশের অতিথি ঋতু শীতকাল। এই সময়ে প্রকৃতি আমাদের জীবন ধারার মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন এনে দেয়। শীতে শহরের লোকজনের কাছে পরিচিত-কাকের ডাক, গাড়ির হর্ণ আর চায়ের কাপ। প্রক্ষন্তরে গ্রামের শীত মানে-কুয়াশার জালে ছিন্ন ভিন্ন করে রোদের স্পর্শ পা ভিজিয়ে দেয় দুবলা ঘাস।এ দিক থেকে গ্রামে যে নবান্ন উৎসব করা হয়, সেটাই মূলত প্রধান এবং আসল নবান্ন উৎসব। এখানে আমরা নতুন ধানকে স্পর্শ করতে পারি। খেতে পারি নানা রকম মুখরোচক পিঠা। সেই হিসেবে শহুরে জীবনে যে নবান্ন উৎসব করা হয়, সেটা একটা প্রতিকী মাত্র। আমরা যাতে আমাদের উৎসবকে ভুলে না যাই এবং এটি সারা জীবন ধরে রাকতে পারি সে জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান। এর আগে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি জুয়েল আহাম্মেদ। তিনি কৃষি খাতে সরকারের নান রকম সহায়তা প্রদানের কথা তুলে ধরে উন্নত চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করেন।

 

অপর দিকে উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লা সুলতান বলেন, গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাঙালির হাজার বছরের প্রাচীনতম উৎসব নবান্ন। নবান্ন উৎসব হলো অসাম্প্রদায়িক উৎসব। অগ্রহায়ণ মাসে কৃষকের নতুন বার্তা নিয়ে আমন ধানের আগমন ঘটে। এ উৎসব বাঙালি জাতিকে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে কৃষিতে এগিয়ে গেছে। এখন আমরা বিশ্বে ধান উৎপাদনে ৩য়, সবজি উৎপাদনে ৩য়, আম উৎপাদনে ৭ম, আলু উৎপাদনে ৭ম ,মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে ৩য় এবং পেয়ারা উৎপাদনে ৮ম স্থানে থেকে বিশ্বপরিমন্ডলে সমাদৃত। বিশ্বে ধান, পাট, কাঁঠাল, আম, পেয়ারা ও আলু এবং সবজি ও মৎস্য-উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বর্তমানে নতুন-জাতের ধান বিনা ২৫ এর উৎপাদন কৃষকদের মাছে স্বপ্নের বীজ বুনছেন। এ ছাড়াও যে সকল ফল এক সময় বিদেশ থেকে এনে খাওয়া লাগতো এখন তার অনেক আংশ বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে। আর এসব কিছু সবই সম্ভব হয়েছে কেবল জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কারনে।

 

সানশাইন/ সোহরাব

 

 


প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৩ | সময়: ৫:২৫ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine