সর্বশেষ সংবাদ :

বাবার লাশ দাফনে ছেলের বাধা, জমির ভাগাভাগি নিয়ে সংষর্ষে তিনজন আহত

মান্দা প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় জমির ভাগ না পেয়ে এক বৃদ্ধের লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছেলের বিরুদ্ধে। এনিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হলেও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। অবশেষে সকল বাধা উপেক্ষা করে মৃত্যুর ২৭ ঘন্টা পর সোমবার বিকেল ৪টার দিকে ওই বৃদ্ধের লাশ দাফন করে স্থানীয় লোকজন।
মৃত ব্যক্তির নাম কলিম উদ্দিন শেখ (৯৫)। তিনি উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের দক্ষিণ মৈনম গ্রামের বাসিন্দা। বার্ধক্যজনিত নানান অসুখে আক্রান্ত হয়ে রবিবার দুপুর ১টার দিকে তিনি মারা যান।
বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন ওই বৃদ্ধের দ্বিতীয় ছেলে দুলাল হোসেন শেখ। সোমবার সকালে মৃত কলিম শেখের লাশ দাফনে বাধা দিয়ে জমির ভাগাভাগি নিয়ে ওয়ারিশদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ছেলে দুলাল শেখ। এক পর্যায়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে সমঝোতার চেষ্টা করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুলাল শেখ ও তার সহযোগীরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে প্রতিবেশী আনিছুর রহমান (৪০), রুবিনা বিবি (৩৫) ও শরিফুন বিবি (৩০) আহত হন। এদের মধ্যে আনিছুর রহমানকে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ অবস্থায় ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে সহায়তা চান মৃত কলিম উদ্দিন শেখের পুত্রবধূ রোকেয়া বিবি। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা। এরপর দফায় দফায় বৈঠক শেষে বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় লোকজন জোটবদ্ধ হয়ে বৃদ্ধের লাশ দাফন করে।
উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রেজাউল ইসলাম বলেন, কলিম উদ্দিন শেখের তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এরই মধ্যে বড়ছেলে সাইদুর শেখ ও ছোটছেলে দেলোয়ার শেখ মারা গেছেন। এক মেয়ে রুবিনা বিবি বাবার কাছে ও দ্বিতীয় ছেলে দুলাল শেখ ঢাকায় থাকেন। বৃদ্ধ অবস্থায় তিনি দুই নাতি এমদাদুল হক ও রাকিব হোসেনকে ৬ বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। এনিয়ে দ্বিতীয় ছেলে দুলাল শেখের সঙ্গে ওয়ারিশদের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
ইউপি সদস্য আরও বলেন, বার্ধ্যজনিত বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হয়ে গতকাল রবিবার দুপুর ১টার দিকে কলিম শেখ মারা যান। তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দ্বিতীয় ছেলে দুলাল শেখ সোমবার ভোরে বাড়ি আসেন। এর পর অন্য ওয়ারিশদের সঙ্গে বাবার সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বাবার লাশ দাফনে বাধা দেন। এ নিয়ে সংঘর্ষে তিনজন আহত হন।
মৈনম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, কলিম শেখের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজনের কাছে শুনেছি। কিন্তু জমির ভাগাভাগি নিয়ে তার লাশ দাফনে বাধা দিয়েছিল তার ছেলে দুলাল শেখ। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, ৯৯৯ থেকে ফোনে পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আশপাশের লোকজনের সহায়তায় সোমবার বিকেলে বৃদ্ধের লাশ দাফন করা হয়।


প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩ | সময়: ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ