শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, চারঘাট: রাজশাহীর চারঘাটে ডেঙ্গু রোগীর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিট সংকটের কারণে ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ থাকায় চারঘাটের তিনটি বেসরকারী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলছে ডেঙ্গুর পরীক্ষা। তবে তাদের রিপোর্ট নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।
একেকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একে ধরণের রিপোট প্রদান করা হচ্ছে। ফলে কোনটি সঠিক তা নিরুপণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে রোগীর অভিভাবকরা পড়েছেন ব্যাপক বেকায়দায়। তবে হাসপাতলের চিকিৎসকদের দাবি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, গত বুধবার রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মেঘলা জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসলে তাকে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয় ওহি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এরপর রিপোর্টে প্লাটিনেট মাত্র ৪২ হাজার আসলে তাৎক্ষনিক ভতি করা হয় মেঘলাকে।
এরপর ডেঙ্গু রোগের লক্ষন দেখে সন্দেহ হলে চিকিৎসক মেঘলাকে অন্য একটি ডায়াগনস্টিক স্টোরে ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামশ দেন। এরপর মেঘলার অভিভাকরা মেঘলাকে দি মেডিনোভা ও গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টাওে ডেঙ্গ পরীক্ষা করানো হলে সেখানে প্লাটিনেট ধরা পড়ে ২লক্ষ ৬৮ হাজার ও ২লক্ষ ৭৮ হাজার। এরপর সৃষ্টি হয় ওহি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোট নিয়ে জটিলতা।
এ বিষয়ে মেঘলার বাবা সাদ্দাম হোসেন বলে, জ্বর নিয়ে আমার ৭ বছরের মেয়ে মেঘলাকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে কতব্যরত চিকিৎসক আইশা সিদ্দিকা শান্তা ডেঙ্গুর পরীক্ষার পরামশ দেন। পরে ওহি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হলে সেখানে প্লাটিনেট আসে মাত্র ৪২ হাজার। এরপর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আতিকুল হক পুনরায় ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য অন্য ডায়াগনষ্টিক সেন্টাওে পাঠালে দি মেডিনোভা ডায়াগনষ্টিকত সেন্টারে প্লাটিনেট আসে ২লক্ষ ৭৮ হাজার।
এরপর রিপোট টি আরও জানতে গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গেলে সেখানে প্লাটিনেট আসে ২লক্ষ ৬৮ হাজার। একেকটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে একে ধরণের রিপোট আসায় ব্যাপক জটিলতা সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি সম্পকে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আতিকুল হক বলেন, রোগীর লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছিল ডেঙ্গু হয়নি। তারপরও রিপোর্ট এ প্লাটিনেট কম দেখে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। পরক্ষেণে দি মেডিনোভা ও গ্রামীণ ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু পরীক্ষঅ করানো হয়। সেখানে যথাক্রমে প্লাটিনেট আসে ২লক্ষ ৭৮ হাজারর ও ২ লক্ষ ৬৮ হাজার। এ রিপোর্ট নিয়ে রোগীর অভিভাবকরা চরম বেকায়দায় পড়ে যায়। তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওহি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী বশির আহম্মেদেও সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটি ভুল হয়ার সুযোগ নেই। আমরা মেশিনের মাধ্যমে ডেঙ্গু পরীক্ষা করি। অন্য ২টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সুপার এডিট করে রিপোট করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আমরা রোগীর অভিভাবকদের সঙ্গে বসে বিষয়টি নিস্পত্তি করেছি।
উপজেলা ইউএনও সোহরাব হোসেন বলেন, যিনি ওই রোগীকে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন মুলত তিনি এটি করতে পারেন না। তিনি ডাক্তারও নন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে।
চারঘাট ডেঙ্গুর জন্য রাজশাহী জেলায় হটস্পট। কেউ ডেঙ্গু রোগ নিয়ে অনিয়ম করে থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।