শুক্রবার, ১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার,চারঘাট:
রাজশাহীর চারঘাটে ডেঙ্গু রোগীর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিট সংকটের কারণে ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ থাকায় চারঘাটের তিনটি বেসরকারী ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে চলছে ডেঙ্গুর পরীক্ষা। তবে তাদের রিপোর্ট নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। একেক টি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে একে ধরণের রিপোর্ট প্রদান করা হচ্ছে। ফলে কোনটি সঠিক তা নিরুপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে রোগীর অভিভাবকরা পড়েছেন ব্যাপক বেকায়দায়। তবে হাসপাতলের চিকিৎসকদের দাবি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, গত বুধবার রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মেঘলা জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসলে তাকে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয় ওহি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে। এরপর রিপোর্টে প্লাটিলেট মাত্র ৪২ হাজার আসলে তাৎক্ষনিক ভর্তি করা হয় মেঘলাকে। এরপর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ দেখে সন্দেহ হলে চিকিৎসক মেঘলাকে অন্য একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ দেন। এরপর মেঘলার অভিভাকরা মেঘলাকে দি মেডিনোভা ও গ্রামীন ডায়াগনষ্টিক সেন্টাওর ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হলে সেখানে প্লাটিলেট ধরা পড়ে ২লক্ষ ৬৮ হাজার ও ২লক্ষ ৭৮ হাজার। এরপর সৃষ্টি হয় ওহি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের রিপোর্ট নিয়ে জটিলতা।
এ বিষয়ে মেঘলার বাবা সাদ্দাম হোসেন বলে, জ্বর নিয়ে আমার ৭ বছরের মেয়ে মেঘলাকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আইশা সিদ্দিকা শান্তা ডেঙ্গুর পরীক্ষার পরামর্শ দেন। পরে ওহি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হলে সেখানে প্লাটিলেট আসে মাত্র ৪২ হাজার। এরপর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আতিকুল হক পুনরায় ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য অন্য ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পাঠালে দি মেডিনোভা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে প্লাটিলেট আসে ২লক্ষ ৭৮ হাজার। এরপর রিপোর্ট টি আরও জানতে গ্রামীন ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গেলে সেখানে প্লাটিলেট আসে ২লক্ষ ৬৮ হাজার। একেকটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে একে ধরণের রিপোর্ট আসায় ব্যাপক জটিলতা সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি সম্পর্কে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আতিকুল হক বলেন, রোগীর লক্ষন দেখে মনে হচ্ছিল ডেঙ্গু হয়নি। তার পরেও রিপোর্ট এ প্লাটিলেট কম দেখে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। পরক্ষেনে দি মেডিনোভা ও গ্রামীন ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে যথাক্রমে প্লাটিলেট আসে ২লক্ষ ৭৮ হাজারর ও ২ লক্ষ ৬৮ হাজার। এ রিপোর্ট নিয়ে রোগীর অভিভাবকরা চরম বেকায়দায় পড়ে যায়। তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওহি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের স্বাত্তাধিকারী বশির আহম্মেদেও সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটি ভুল হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা মেশিনের মাধ্যমে ডেঙ্গু পরীক্ষা করি। অন্য ২টি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার সুপার এডিট করে রিপোর্ট করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আমরা রোগীর অভিভাবকদের সঙ্গে বসে বিষয়টি নিস্পত্তি করেছি।
উপজেলা ইউএনও সোহরাব হোসেন বলেন, যিনি ওই রোগীকে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন মুলত তিনি এটি করতে পারেন না। তিনি ডাক্তারও নন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে। চারঘাট ডেঙ্গুর জন্য রাজশাহী জেলায় হটস্পট এলাকা। কেউ ডেঙ্গু রোগ নিয়ে অনিয়ম করে থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সানশাইন /শামি