বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে সন্দিহান সালাউদ্দিন

স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সামর্থ্য এবং মাঠে তাদের কার্যকারিতার প্রশ্নে আবারও যেন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় দুষলেন খেলোয়াড়দের, কাঠগড়ায় তুললেন কোচদেরও। বলা যায়, ছাড় দিলেন না কাউকেই। সংশয় প্রকাশ করলেন স্থানীয় ক্রিকেটারদের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে। তাদের ঠিকঠাকভাবে গড়ে না তোলায় কড়া সমালোচনা করলেন কোচদেরও।
গত মাসের শেষ দিকে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের পার্থক্য নিয়ে বলেছিলেন সালাউদ্দিন। এবার তার সুর আরও কড়া। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয়ের পর স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে হতাশার কথা বললেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স কোচ।
“ওদের কাছে আমি সামান্য কমনসেন্স চাই। তাদের আসলে কাণ্ডজ্ঞান আছে কি না, এটা নিয়ে আমার সন্দেহ (আছে)।” “আপনি যদি ১৫ বছর ধরে মিরপুরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন, আপনি জানেন যে আপনার কী করতে হবে। সেই কাণ্ডজ্ঞান যদি আপনার না থাকে, তাহলে আসলে আমি হতাশ।”
সালাউদ্দিন মনে করেন, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের শটের পরিধি অনেক বেশি। অনেক দূরে বল পাঠানোর সামর্থ্য আছে। কিন্তু বিস্ময়করভারে কোনো কারণে মাঠে তারা সেটা অনুবাদ করতে পারেন না। বরং সীমিত সামর্থ্য নিয়েও বিদেশি ক্রিকেটাররা এখানে এসে সাফল্য পাচ্ছেন।
“আমি আরেকটা সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, আমাদের দেশে অনেকে হয়তো মাথা দিয়ে খেলে, অনেকে খেলে না। বেশিরভাগই মাথা ছাড়া খেলে। যেদিন দেখে ‘প্রশ্ন কমন পড়ে গেছে’, সেদিন ভালো খেলে, যেদিন পড়ে না সেদিন ভালো খেলে না। খুবই হতাশাজনক। আপনি যখন ১০/১২ বছর ক্রিকেট খেলছেন তখন সামান্য কাণ্ডজ্ঞান থাকা উচিত, কখন কী করতে হবে।”
স্থানীয় ক্রিকেটারদের ম্যাচ পড়তে পারার সামর্থ্য নিয়েও সন্দিহান সালাউদ্দিন। তিনি মনে করেন, মাঠে গিয়েও তারা কোচের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। “আমার মনে হয়, তাদের ক্রিকেট জ্ঞান অনেক কম। সামান্য জিনিস- এই উইকেটে আমার কী করতে হবে বা কোন বোলারকে আমি কখন চার্জ করব। যখন সব কিছু আমার নিয়ন্ত্রণে আছে, তখন নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কেন! তো এ বুদ্ধি যদি কারো না হয় তাহলে তারা ক্রিকেট কবে শিখবে ওপরওয়ালা জানে।”
এই প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন দায় দিলেন কোচদের। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে এবং বয়সভিত্তিক দলে যারা কাজ করেন তাদের। “আপনার যদি গ্রামারে ছোট বেলা থেকে খারাপ থাকেন, তাহলে তো আপনি ইংলিশ রচনা পড়তে পারবেন না। আমরা আসলে ছোটবেলা থেকে তাদের ওভাবে গড়ে তুলছি। আমরা বেশিরভাগই সব সময় কোচ নির্ভর খেলোয়াড়, কোচ যেটা বলবে (সেটা করবে)। প্রকৃতপক্ষে ভেতরে গিয়ে তো কোচ খেলবে না, তখনই ব্রেনটা লক হয়ে যায়। সিস্টেমেই গলদ।”
“কম্পিউটারে সেটআপটা ঠিক মতো হয়নি। ছোটবেলা থেকে যদি সেটআপ ভালো মতো হতো, প্রকৃতপক্ষে তাদের যদি আমরা স্বাধীনভাবে গড়ে তুলতে পারতাম, তাহলে এ সমস্যাটা হতো না। আমরা যারা কোচিং করাই তাদেরই সমস্যাটা বেশি, ছেলেদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। একটা পর্যায়ে এসে ব্রেনটা কাজও করে না। ছোটবেলা থেকে যদি আমাদের কোচিং পদ্ধতিতে পরিবর্তন করি, তাহলে হয়তো কাজে আসবে।”


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩ | সময়: ৭:০০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ