জলাবদ্ধতা নিরসনে ইউএনও’র প্রশংসনীয় উদ্যোগ রক্ষা পেলো দুই উপজেলার ৫শ পরিবার ও ৪টি বিলের ফসল

অহিদুল হক, বড়াইগ্রাম: অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলার কৃষকদের চারটি বিলের প্রায় ৮শ’ হেক্টর জমির ধান ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কমপক্ষে পাঁচশটি বাড়ির উঠান ও ঘরে বেশি পানি উঠেছে। কিন্তু পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েন ভূক্তভোগীরা। পরে স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৪শ মিটার দীর্ঘ খাল খনন করেন। এতে জলাবদ্ধতা থেকে বাড়ি ও ফসল রক্ষা পাওয়ায় দারুণ খুশী এ দুই উপজেলার ভূক্তভোগী হাজার হাজার মানুষ।
গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, দুই উপজেলার মহেশ্বর, টিটিয়া মাঝগ্রাম, কচুয়া ও সুন্দরবাড়িয়া মৌজার চারটি বিলের পানি বড়াইগ্রামের দৌলতপুরের ভেতর দিয়ে নেমে যেত। কিন্তু প্রায় তিন বছর আগে একজন কৃষক একটি সরকারী কালভার্টের মুখ বন্ধ করে তার জমিতে মাটি ভরাট ভিটা তৈরী করেন। এতে এসব বিলের পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কয়েক বছর ধরেই বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চারটি বিলের প্রায় ৮শ হেক্টর জমির ধান ডুবে যায়। এবারও ভারী বর্ষণে পানি জমে ধান পাকার আগমূহুর্তে বেশির ভাগ জমির ধান ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এছাড়া বিলের পানি উপচে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে আরও কমপক্ষে পাঁচশ’ টি বাড়ি। বিষয়টি ইউএনও’কে জানালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আট ফুট প্রস্থ ও ৪শ’ মিটার দীর্ঘ একটি খাল খননের উদ্যোগ নেন। শনিবার খাল খনন শেষ হলে বিলের পানি দ্রুত নেমে যাচ্ছে। এতে বাড়িঘর ও ফসল রক্ষা পাওয়ায় দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ দারুণ খুশী।
শনিবার সরেজমিনে গেলে লালপুর উপজেলার মাঝগ্রামের কৃষক আতাউর রহমান বলেন, বিলে আমার ১৭ বিঘা জমি রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ধান ডুবে যায়। এবারও ধানের শীষ বের হয়েছে, কিন্তু অতিবৃষ্টিতে কিছু জমির ধান ডুবে গেছে, বেশির ধান জমির ধান ডোবার উপক্রম। তবে খাল খননের পর দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে। এতে আমার জমির ধানগুলো রক্ষা পাবে। তার মতো অপর কৃষক ইসমাইল হোসেন ও আব্দুল কাদের মল্লিকসহ সেখানে উপস্থিত শতাধিক চাষীরাও এমন মত ব্যক্ত করেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহান উদ্দিন মিঠু জানান, সমস্যাটি জানার পর কাঁচা রাস্তা সংলগ্ন খাস জমি বের করে দ্রুত সরকারি খরচে খাল খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল জানান, জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে খালটি খনন করতে হয়েছে। এতে দুই উপজেলার বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতার সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান হলো।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৩ | সময়: ৭:১১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ