স্যাংশনে আ’লীগের একটিও পশম ছেড়া যাবে না : লিটন

স্টাফ রিপোর্টার : স্যাংশন নিয়ে আওয়ামী লীগের একটা পশমও ছেড়া যাবে না মন্তব্য করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, নির্বাচন আসলে যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র করেন, বিদেশীদের হাতে হাত মেলান, দেশী-বিদেশী চক্রান্তের সঙ্গে লিপ্ত হন, তারা আবারো সক্রিয় হয়েছে।
লিটন বলেন, তারা বলে- নির্বাচনে অংশ নেবে না, শর্ত দেয় ‘শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং কেয়ারটেকার সরকার দিতে হবে।’ আমি সেই বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে বলছি, নির্বাচনে আসবেন কি আসবেন না, সেটি আপনাদের নিজস্ব রাজনৈতিক বিষয়। যদি নির্বাচনে আসেন আপনাদেরই ভালো হবে। নির্বাচনে না এসে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার এমন কোন চক্রান্ত যদি করেন, তাহলে মার্কিন ভিসা নীতিতে কি বললো, সেটি আমরা দেখতে যাব না। বিএনপি-জামায়াতকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার রাজশাহী মহানগরীর পাঠানপাড়া শিমুল তলার মোড় আয়োজিত বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, রাজশাহী মহানগর ও জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগের জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন উদ্বোধক বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সম্মেলনের শুরুতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশ হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, তারেক জিয়া লন্ডনে বসে নির্দেশ দেবে, আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হবে, এই স্বপ্ন দেখেন না। যদি এই খোয়াব দেখেও থাকেন, সেটি কোনদিন আলোর মুখ দেখবে না।
তারেক জিয়ার উদ্দেশ্যে রাসিক মেয়র লিটন বলেন, যদি রাজনীতি করার সখ থাকে দেশে আসেন। আপনার বিরুদ্ধে মামলা আছে, জেলে যান। আপনার নেতাকর্মীরা যদি সোচ্চার হয়, আন্দোলনের মাধ্যমে আপনাকে ছেড়ে দিতে সরকারকে বাধ্য করতে পারে, জনগণ যদি রায় দেয়, তাহলে বুঝবো আপনি দায়িত্ব নিতে পারবেন।
রাসিক মেয়র বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের নাম বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে সেটি আমার কমে যাবে। কিন্তু যারা এগুলোকে পুঁজি করে বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়, তারা ব্যর্থ অতীতেও হয়েছে, আগামীতেও হবে।
বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০১৪ সালে আপনারা (বিএনপি) নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। নির্বাচন বর্জন করে জ্বালাও পোড়াও, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, বাসে আগুন, রেললাইন উপড়ে ফেলা, গাছ কাটা সহ ব্যাপক নাশকতা করেছিলেন। কিন্তু আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা তাদের মোকাবেলা করতে পারি।
রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য নূরুল ইসলাম ঠান্ডু ও সদস্য বেগম আখতার জাহান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ডা: মোঃ মনসুর রহমান, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আয়েন উদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে নেতাকর্মীদের বিপুল উৎসব, উদ্দীপনা ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয়। এরপরে দুপুরে মহানগরীর হযরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহ.) ঈদের পাশের রাস্তায় শিমুল তলায় এ সম্মেলন শুরু হয়। কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলনের শুরুতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশ হয়।
সম্মেলন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সম্মেলন উপলক্ষে সকাল থেকেই নগর ও জেলা যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে রাজশাহী শহরে আসেন। সকাল ১০টার মধ্যেই সম্মেলনস্থল নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে ভরে যায়। পরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে উপস্থিত হতে থাকেন। এরপর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন শিল্পীরা। প্রথমের দিকে স্থানীয় বক্তারা বক্তব্য দেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১০টার পর থেকেই সমাবেশ স্থলে দলে দলে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। বেলা বেড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় আরো বাড়তে থাকে। আশেপাশের উপজেলা থেকে বাসে করে নেতাকর্মীরা সম্মেলন স্থানে আসে। কেউ বা পায়ে হেঁটে আসে। সম্মেলনস্থল নেতাকর্মীদের পদচারণা ও শ্লোগানে শ্লোগানে মুখোর হয়ে উঠে। রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, বাগমারা, মোহনপুর, পবা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাঘা ও চারঘাট থেকেও বিপুল সংখ্যক যুবলীগের নেতাকর্মীরা সম্মেলনে আসে।
রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য নূরুল ইসলাম ঠান্ডু ও সদস্য বেগম আখতার জাহান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ডা: মনসুর রহমান, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আয়েন উদ্দিন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আবিদা আনজুম মিতা, বিশেষ বক্তা হিেেসব যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ হেলাল উদ্দিন, রাজশাহী জেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ আবু সালেহ সহ যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনে সম্মেলনে সঞ্চালক ছিলেন রাজশাহী জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলী আজম সেন্টু।সম্মেলনে যুবলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৫ মার্চ মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে দ্বিতীয়বার রমজান আলীকে সভাপতি ও মোশাররফ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়। প্রায় দুই যুগ ধরে রাজশাহী মহানগর যুবলীগ তাঁদের হাতেই আছে। প্রায় সাত বছর পর হতে যাওয়া সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২৮টি জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়ে। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১০টি, সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮টি আবেদন আছে।
এদিকে রাজশাহী জেলা যুবলীগেরও প্রায় একই সময়ে সম্মেলন হয়েছিল। সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ। সে সময় দ্বিতীয়বার আবু সালেহকে সভাপতি ও খালিদ ওয়াসিকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। খালিদ ওয়াসি মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন আলী আজম। আবু সালেহ ২০০৪ সালে প্রথম জেলা যুবলীগের সভাপতি হন।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩ | সময়: ৬:২০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ