সর্বশেষ সংবাদ :

জালিয়াতি করে বিধবার বসত বাড়ি লিখে নেওয়ার অভিযোগ

আক্কেলপুর প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নিজ মেয়ের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে বসত বাড়ি লিখে নেওয়ার অভিযোগ করেছন ময়না বেগম নামের এক বিধবা। তিনি আক্কেলপুর পৌর এলাকার হাস্তাবস্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় তিনি নিজ মেয়ে রেহেনা বেগম, জামাই সিরাজুল ও আক্কেলপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সিরাজুল ইসলামের শাস্তি দাবী করেছেন।
মূল দলিলের অবিকল জাবেদা নকল দলিল সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২১ সালের একটি হেবা দলিলে আক্কেলপুর উপজেলার হাস্তাবসনন্তপুর মৌজার ১৬.৩৩ শতাংশ জমি হস্তান্তর হয়। দলিলটির দাতা বিধবা মা ময়না বেগম ও গ্রহীতা নিজ মেয়ে রেহেনা বেগম। দলিলটির লেখক সিরাজুল ইসলাম ও সাব রেজিস্ট্রার দোস্ত মোহাম্মদ।
সরোজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিধবা মা ময়না বেগম নিজ মেয়ে রেহেনা বেগম, জামাই ও এক পালিত সন্তানকে নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। প্রায় ৬ বছর ধরে মা ও মেয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। বিগত প্রায় ২০ দিন পূর্বে মেয়ে রেহনা বেগম, জামাই সিরাজুল ইসলামের সাথে আবারও কলহ হয় বিধবা ময়না বেগমের। কলহের বিষয়ে স্থানীয়দের কাছে বিচার দাবী করেন ময়না বেগম। বিচারের দিন বিধবা ময়না জানতে পারেন মেয়ে তার বসত বাড়ি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন।
এ ঘটনায় আক্কেলপুর থানায় গত ৮ সেপ্টেম্বর ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বিধবা ময়না বেগম।
বিধবা মা ময়না বেগম বলেন, ‘মেয়ে জামাইয়ের সাথে ঝগড়া হওয়ার পরে জানতে পারি তারা আমার বসত বাড়ি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। আমি আমার মেয়েকে কোন জমি কখনো দলিল করে দেইনি। পরে খোঁজ খবর নিয়ে অফিস থেকে দলিলের নকল ওঠাই। দলিলে যে টিপছাপ আছে সেটাও কেমন করে নিয়েছে তাও জানিনা। আমি স্বাক্ষর করতে পারি। আমি আমার মেয়ে, জামাই ও মহুরীর শাস্তি চাই’।
এবিষয়ে মেয়ে রেহেনা বেগম বলেন, ‘মায়ের সাথে ঝামেলার একটা সময় আমি বুঝতে পারি মা আমাকে কোন জমি দিবেনা, সব আমার পালিত ভাইকে দিবে। অন্য জমি নিয়েও গন্ডগল হয়। একসময় আমার মা স্ট্রোক করে। এর কয়েকদিন পরে আমার মাকে রেজিট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে জমি লিখে নিয়েছি। তখন আমার মায়ের একটু একটু জ্ঞান ছিল অবার ছিলও না, মাথারও সমস্যা ছিল’।
দলিল লেখক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জমির দলিল লিখার আগে প্রত্যেকটা কাগজ ভালো করে যাচাই বাছাই করি। আমার পরে দলিল এর কাজ সম্পন্ন করেন অফিসার। যদিও এর পরে তারা কোনভাবে অন্যায়ের আশ্রয় নিয়ে থাকে তাহলে তাদের শাস্তি হওয়া উচিৎ’।
অভিযোগের বিষয়টি আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দীক নিশ্চিত করেছেন।
আক্কেলপুর উপজেলা অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব রেজিস্ট্রার সামিউল হাসান বলেন, ‘এটি আদালতের বিষয়। দাতা প্রতারণার স্বীকার হলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন’।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩ | সময়: ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ