সালিশে সংঘর্ষের মামলায় গ্রেপ্তার হচ্ছে না আসামী

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: রাজশাহীর বাঘার পীরগাছা গ্রামে জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ৮ জন আহত হয়েছে। গত ২৬ আগস্ট সকালে এক পক্ষের বাড়ির সামনে এক সালিশি বৈঠকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে মুমূর্ষু অবস্থায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই সাথে তার বাবা আশিতিপর বৃদ্ধ মকছেন আলীকে এবং ছোট ভাই একরামুল হককেও একই ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। অন্যরা বাঘা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষ থেকে থানায় পৃথক দুটি মামলা হলেও গত ৮ দিনে কোন আসামীকে গ্রেফতার হয়নি। এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ আগস্ট সকালে পীরগাছা গ্রামের জনৈক মকছেদ আলী ও মুনসুর আলীর মধ্যে জমি নিয়ে বিবাদের জের ধরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রহমানের সভাপতিত্ব মনসুর আলীর বাড়ির সামনে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিশে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে মনসুর আলী পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের উপরে হাসুয়া ও লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষে মকছেন আলী (৭৫) তার ছেলে বজলুর রহমান (৪০) ও একরামুল হক (৩২) গুরুত্বর জখম হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদের মধ্যে বজলুর রহমানকে হাসুয়া দিয়ে হাত এবং পিঠের উপরে কোপ দেওয়ায় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। ডাক্তার জানিয়েছেন তার অবস্থা আশংক জনক।
এদিকে ঘটনার পরদিন মকছেন আলীর বড়ছেলে কলেজ শিক্ষক বাবর আলী বাদি হয়ে ১০ জনকে আসামী করে বাঘা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে দুদিন আগে এ মামলার পাঁচ আসামী জামিনে এসে বাদিকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন কলেজ শিক্ষক বাবর আলী।
অপরদিকে মনসুর আলী পক্ষের মনসুর আলী (৫৫) রুজদার আলী (৫২), রাসেল আহম্মেদ (২৮), রাশিদুল ইসলাম (২৯) ও আব্দুর রাজ্জাক (৩০) আহত হয়। আহতরা বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দুই ওয়ারিশদের এ সম্পত্তি। মূলমালিক মারা জাওয়ার পর তাদের জমি এখন পর্যন্ত বাটোয়ারা হয়নি। এ নিয়ে পরপর পাঁচদিন সালিশ করেও এদের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তবে ষষ্ঠদিন উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সালিশে মিমাংসা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আকষ্মিক দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটা-কাটির জের ধরে আনাকাংখিত ভাবে এই সংঘর্ষ বাধে।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা রজু করা হয়েছে। প্রথম মামলাটি করেছেন বাবর আলী। তার দায়েরকৃত মামলার পাঁচ আসামী দুদিন আগে জামিন নিয়েছেন। আমরা উভয় পক্ষের আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টায় চালাচ্ছি। তবে আসামীরা পলাতক থাকায় এখন পর্যন্ত কাওকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩ | সময়: ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ