ছেলের সুন্নতে খাতনায় না বলায় স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা

তানোর প্রতিনিধি: :

রাজশাহীর তানোরে ছেলের সুন্নতে খাতনায় বাবাকে না বলায় স্ত্রী নিপা ও একমাত্র সন্তান নুর ইসলামকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পাষন্ড এক স্বামী। এমন নৃশংষ ভাবে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আজ (২৭ আগস্ট) সকালে পুলিশের কাছে জবানবন্দী দিয়েছে ঘাটক স্বামী আলিউল ইসলাম (৩০)।

 

 

 

 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গেলো শুক্রবার ২৫ আগস্ট নিপা তার ছেলে নুরের সুন্নতে খাৎনা দেন। কিন্তুৃ ছেলের সুন্নতে খাতনায় পিতা আলিউলকে জানায় নি নিপা। এতে ক্ষিপ্ত হয় স্বামী আলিউল। পরে ঘটনার দিন  শনিবার ২৬ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে নিপার পিতার বাড়ি উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচন্দর উত্তরপাড়া মহল্লায় যায় পাষন্ড মাদকাসক্ত স্বামী আলিউল। শ্বশুর বাড়ি ফাঁকা পেয়ে পরিকল্পিত ভাবে বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত তান্ডব চালায় স্ত্রী নিপার বাসায়। প্রথমে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী নিপাকে হত্যা করে। পরে সন্তান নুর কান্নাকাটি করে চিৎকার দিয়ে এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে আলিউল। পরে এলাকাবাসী অলিউলকে গণপিটুনি দেয়। এতে সামান্য আহত হলে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তাকে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেল্পক্সে ভর্তি করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়।

 

 

 

 

প্রসঙ্গ, তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির মাহানপুর পৃর্বপাড়া গ্রামের মৃত সিদ্দিক আলীর মাদকাসক্ত পুত্র আলিউল ইসলাম ৭-৮ বছর আগে বিয়ে করে মুন্ডুমালা পৌরসভার পাঁচন্দর উত্তরপাড়া মহল্লার বাসিন্দা খাজিদার মেয়ে নিপাকে (২৫)। তাদের দাম্পত্য জীবনে পুত্র নুর ইসলাম আসে। বর্তমানে নুরের বয়স ৫ বছর। এহেন অবস্থায় তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় অসহ্য অবস্থায় বছর খানেক আগে নিপা ও আলিউলের মধ্যে দ্বন্দ্বে তালাকও হয়। তালাকের পর থেকে স্বামী-স্ত্রী আলাদা বসবাস করতেন।

 

 

 

 

 

নিহত নিপার বড়ভাই ভুলুর তথ্যমতে, দেড় বছর আগে তার বোনকে হাসুয়া দিয়ে কোমরে কোপ দেয় আলিউল। তখন আলিউলের নামে তারা মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় কারাগারে ছিল আলিউল। পরে পারিবারিকভাবে আপোষের মাধ্যমে নিপা আলিউলের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করেন। সম্প্রতি ৭-৮ মাস আগে আপোষের মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্ত হন আলিউল। দেড় মাস আগে আবারও নিপা-অলিউলের মধ্যে বিয়ে হয়। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) শিশু নূরের সুন্নাতে খাৎনাও করা হয়। ওই খাৎনায় না বলায় শিশু নুর ও স্ত্রী নিপাকে একই ছুরি দিয়ে হত্যা করে পাষন্ড স্বামী আলিউল। এঘটনায় নিহত নিপার মা খাদিজা বেগম বাদি হয়ে আজ ২৭ আগস্ট তানোর থানায় আলিউল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

এব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, নিহত শিশু নুর ও তার মা নিপাকে রামেক হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে সন্ধ্যায় তাদের পারিবারিক গোরস্থানে লাশ দাফন সম্পূর্ণ হয় বলে জানান ওসি।

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৩ | সময়: ৮:১৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর