সর্বশেষ সংবাদ :

মোহনপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের জমি মর্টগেজ দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর মোহনপুরে অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ বিদ্যালয়ের জমি মর্টগেজ দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে অভিভাবক সদস্য আব্দুল আজিজ জেলা রাজশাহীর বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৫ এ ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মামলার কপি থেকে জানা যায়, বিদ্যালয়ের জমি ব্যক্তি স্বার্থে বিক্রয় বা ব্যাংকে মর্টগেজ দিয়ে গ্রহণের অনুমতি নাই। কিন্তু কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ের জমি (কেশরহাট মৌজা, জেএলনং ১০৮, হাল দাগনং ৬২৬, ৬২৪, ৬২৫, ৬২৬, ৬২৭, ৬২৮, ৬২৯ ও ৬৩২, পরিমান- ১ দশমিক ৪৩৩২ একর) মর্টগেজ দিয়ে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড থেকে ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন। যার মর্টগেজ দলিল নম্বর ৩০২৫/২০২০ এবং পাওয়ার অব এটর্নি নম্বর ৩০২৬/২০২০। তবে এই টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা না দিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকে কানাঘুষা হলেও কয়েকদিন আগে প্রকাশ পায়। ব্যাংকের কিস্তি না দেওয়ায় নোটিস আসলে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হয়। এরপর চলতি বছরের চলতি মাসের ১১ তারিখে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করলে ঋণের ৪০ লাখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু স্কুল ফান্ডে এই টাকা জমা দিতে অস্বীকার করেন। এতে অভিভাবক সদস্য ও এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পাশাপাশি বিদ্যালয়ে ঋণকৃত সমুদয় টাকা জমা ও অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে আদালতে মামলা করেন আব্দুল আজিজ নামের ওই অভিভাবক সদস্য।
এব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়েই ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হয়েছিল। তিনি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন। আরো কিছু প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তিনি ডাক্তারের কাছে এসেছেন পরে কথা হবে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রুস্তম প্রামানিক ঋণের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জমি মর্টগেজ দিয়ে ঋণ উত্তোলন খুবই দুঃখজনক ঘটনা’। তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের জমি দিয়ে ব্যক্তি ঋণ নিতে পারে এটিও জানা নেই। আবার ব্যাংক কিভাবে প্রতিষ্ঠানের জমি বন্ধক নিয়ে ঋণ দেন সেটিও জানা নেই’। তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার পরে বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অনিয়মের খবর পাচ্ছি’। এসব কারণে বুধবার একটি অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এব্যাপারে উত্তরা ব্যাংক কেশরহাট শাখার ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি মর্টগেজ দিয়ে ঋণ নেয়া যায় কিনা আমার জানা নেই। তবে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের স্থাপনায় যেহেতু ব্যাংক ভাড়ায় থাকে সেইহেতু ভাড়া থেকে ঋণের কিস্তি নেয়া যাবে বিধায় হয়তো এই প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়া হতে পারে।
এদিকে ২২ আগস্ট অভিভাবক সদস্য ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। এতে প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে তার ক্যাডার বাহিনী ওই এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে মহসীন আলী, আক্তারুল ইসলাম ও মনা কেশরহাট বাজার বনিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিঠুকে ব্যাপক মারপিট করে। মিঠুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত মিঠুর মাথায় ৩১টি সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানা গেছে। এনিয়ে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।


প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৩ | সময়: ৫:২২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ