পানির স্রোতে ভাঙল বড়াল নদীর ব্রিজ

অহিদুল হক, বড়াইগ্রাম: নাটোরের বড়াইগ্রাম পৌরসভার গোপালপুরে শুক্রবার সকালে বড়াল নদীর উপর স্থাপিত একটি ব্রিজ পানির স্রোতে ভেঙ্গে পড়েছে। এতে থানা সদরের সঙ্গে পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডসহ তিনটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের থানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, পৌরসভা, বাজারঘাটসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজে যাতাযাতের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
খবর পেয়ে পৌর মেয়র মাজেদুল বারী নয়ন, যুব মহিলা লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি ও জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ শোভন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটি থানা সদরের সঙ্গে বড়াইগ্রাম পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড এবং নগর, গোপালপুর ও চান্দাই ইউনিয়নকে সংযুক্ত করেছে। কিছুদিন আগে বড়াল নদী খনন করা হয়েছে। ফলে এবার নতুন পানি এসে নদীতে স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। পানির স্রোতে নীচ থেকে মাটি সরে গিয়ে পাইলিং ছাড়া ব্রিক ওয়াল পদ্ধতিতে নির্মিত ব্রিজটি ভেঙ্গে নদীর মধ্যে ধ্বসে পড়েছে।
এতে ভরতপুর, গোপালপুর, বাটরা, তালশো, বাঘাইট, মহানন্দগাছা, কুজাইল, মেরিগাছা, মশিন্দা, দোগাছি, কয়েন, ধানাইদহসহ তিনটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের থানা সদরে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, পৌরসভা ও লক্ষ্মীকোল বাজারে যাতায়াতের একমাত্র পথটি বন্ধ হয়ে গেছে।
সমাজসেবক আশরাফুল সরকার বলেন, এমনিতেই প্রস্থে ব্রিজটি নদীর তুলনায় অর্ধেকেরও কম। তার উপর খননের ফলে নতুন পানির স্রোতে ব্রিজটি ভেঙ্গে গেছে। এতে এলাকার মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ শুরু হয়েছে।
কলেজ শিক্ষক শফীউল হাসান তীতু জানান, আমাদের এলাকার ৮-১০টি গ্রামের ছেলেমেয়েরা এ ব্রিজ পাড় হয়ে বড়াইগ্রাম সরকারী কলেজ, বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও বড়াইগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ কমপক্ষে ৭-৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করে। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় তাদের লেখাপড়া ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেল। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করাসহ ব্রিজটি পুননির্মাণের উদ্যোগ নেয়া দরকার।
সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক হোসেন টিপু বলেন, প্রতিদিন এ পথে শত শত সিএনজি, অটোরিক্সা, অটোভ্যান, ট্রাক-বাস ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় বর্তমানে আমাদের এলাকার মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ছাড়াও থেকে জরুরী রোগী সরকারি হাসপাতাল বা কোন ক্লিনিকে নেয়ার কোন ব্যবস্থা নাই।
বাটরা গ্রামের অটোরিক্সা চালক আব্দুস সালাম জানান, আমরা ঘুম থেকে উঠে অটোরিক্সা নিয়ে লক্ষ্মীকোল বাজারে গিয়ে সেখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া ধরি। এখন ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ায় অটোরিক্সা চালানোই বন্ধ হয়ে গেল।
বড়াইগ্রাম পৌর মেয়র মাজেদুল বারী নয়ন বলেন, ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য একাধিকবার লিখিত আবেদন করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে বিকল্প পদ্ধতিতে যাতায়াত ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।


প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৩ | সময়: ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ