সংসারের ঘানি টেনেও জিপিএ-৫ পেল মুহিব

অহিদুল হক, বড়াইগ্রাম: বাবা থেকেও যেন নেই। কোন খরচপাতি দেন না, এমনকি খোঁজও নেন না। তাই বাধ্য হয়ে ছোট্ট ভুষিমালের দোকান চালিয়ে মা সহ নিজের ভরণপোষণের পাশাপাশি লেখাপড়া করে জিপিএ-৫ পেয়েছে মুজাহিদ হাসান মুহিব। এমন কি বন্ধুদের মাধ্যমে যখন ফলাফল পেয়েছে তখনও সে দোকান চালাচ্ছিল। মুহিব নাটোরের বড়াইগ্রামের লক্ষ্মীকোল গ্রামের কামরুল হাসান ও মাসুদা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান। সে বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষায় অংশ নেয়।
জানা যায়, বছর দেড়েক আগে তার পিতা তাদের ফেলে রেখে চলে যান। এতে মা ও ছেলে চরম বিপাকে পড়েন। পরে সংসারের ব্যয় মিটাতে লক্ষ্মীকোল বাজারে ভুষি মালের ব্যবসা শুরু করে মুহিব। ছুটির দিনে সারাদিন আর অন্য সময়ে সকাল-বিকাল দোকান চালিয়ে রাতে পড়াশুনা করতো সে। যার ফলে নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হতো না তার। তবে বড় হয়ে সেনা কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্নে সব কষ্ট ভুলেও লেখাপড়া চালিয়ে আসছে মুহিব। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও অত্যন্ত বিনয়ী মুহিবের এ ফলাফলে মাসহ স্বজনরা এবং স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দারুণ খুশি।
মুহিবের মা মাসুদা খাতুন বলেন, ছোট্ট বয়সে সংসারের হাল ধরতে গিয়ে আমার ছেলেটা নিয়মিত স্কুলে যাওয়াসহ ঠিকমত লেখাপড়া করতে পারেনি। মেধাবী ছাত্র হিসাবে যদি তাকে নিরবিচ্ছিন্ন পড়ার সুযোগ দিতে পারতাম, তাহলে সে ভাল কিছু করতে পারতো। কিন্তু আমার তো সে সুযোগ নেই।
বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, মুহিব যথেষ্ট মেধাবী ছাত্র। কিন্তু সংসারের প্রয়োজনে দোকান চালাতে গিয়ে তার লেখাপড়া কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছে। উপযুক্ত পরিবেশ দিতে পারলে সে জীবনে বড় কিছু হবে বলে আমি আশাবাদী।


প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৩ | সময়: ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ