ডা. মহিবুলের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: ডা. মহিবুল হাসানের বিরুদ্ধে এবার রাজশাহীর রয়্যাল হাসপাতালের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। ডা. মহিবুল হাসান নিজে ছবিগুলো টাঙ্গিয়ে আবার তিনি নিজেই সেগুলো লোকজন দিয়ে ভাংচুর করেছে এমন দাবি করা হয়েছে।
এমনকি রয়্যাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করার অভিযোগ তুলে তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় রাজশাহীর রয়্যাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজশাহীর রয়্যাল হাসপাতালের পরিচালক ডা. এবি সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ডা. মহিবুল হাসান (সার্জারী) মাইক্রোপ্যাথ ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর রাজশাহী রয়্যাল হাসপাতালে বসার জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাইনুল হকের নিকট বেশ কিছু দিন ঘোরাঘুরি করেন। কিন্তু তৎকালীন রাজশাহী রয়্যাল হাসপাতালে কোন ডাক্তার চেম্বার খালি না থাকার কারণে কর্তৃপক্ষ অপারগতা প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ডা. মহিবুল হাসান নাছোড় বান্দারমত অনেক অনুনয়-বিনয় করেন এবং আপাতত যে কোন রুমে বসার সুযোগ দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। পরে চেম্বারের ব্যবস্থা হলে তা স্থান্তরিত হবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
এঅবস্থায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাইনুল হক বিষয়টি রাজশাহী রয়্যাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। পরে কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে অসম্মতি জানান। কয়েকদিন পরে প্রশাসনিক কর্মকর্তা সহানুভূতি দেখিয়ে সভাকক্ষ ৩০১ নং রুমে তাকে বসার সুযোগ করে দেন। কিছুদিন না যেতেই সভাকক্ষ লেখা প্লেটটি তুলে ফেলেন ডা. মহিবুল হাসান। দুই থেকে তিন মাস যেতে না যেতেই কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ওই কক্ষের আসবাবপত্র সরিয়ে নিজের কেনা আসবাবপত্র দিয়ে কক্ষটি গুছিয়ে নেন।
এদিকে ডা. মহিবুল হাসানকে দেয়া রুমটি রয়্যাল হাসপাতালের প্রয়োজনে বিভিন্ন সভা সেমিনার করার জন্য রুমটি ব্যবহার হতো। এ রুমটি তাকে দেয়ার পর হাসপাতালে অতিরিক্ত সভাকক্ষ না থাকায় প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কর্তৃপক্ষকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক ডা. মহিবুল হাসানকে কয়েকবার মৌখিকভাবে ও লিখিতভাবে কক্ষটি ছাড়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। তিনি রুমটি ছেড়ে দিবো বলেন, কিন্তু এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না।
গত ২৫ জুলাই দুপুর দেড়টার দিকে অধ্যাপক ডা. মহিবুল হাসান এবং তার এ্যাটেনডেন্টসহ হাসপাতালে প্রবেশ করেন। দুপুর ২ টার পর ৩য় তলার কর্মচারীরা ডিউটিতে গিয়ে দেখতে পান ৩০১ নং কক্ষের সামনে অধ্যাপক ডা. মহিবুল হাসানসহ পুলিশের উপস্থিতি।
বিষয়টি দেখার পর কর্মচারিরা হাসপাতালের ওই রুমে গিয়ে দেখতে পান রুমের ভেতরে কিছু আসবাবপত্র ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি মেঝেতে পড়ে রয়েছে। সেগুলোকে দেখিয়ে পুলিশের কাছে রয়্যাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অধ্যাপক ডা. মহিবুল হাসান অভিযোগ করছেন। এ ঘটনাটি দেখে রাজশাহী রয়্যাল হাসপাতালের স্টাফ বিষয়টি দেখে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. এবি সিদ্দিকী বলেন, বেসরকারী এধরনের হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু বা প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গানোর উপর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এমন কি রয়্যাল হাসপাতালের ওই কক্ষটিতে কিভাবে বঙ্গবন্ধু বা প্রধানমন্ত্রীর ছবি এলো সেটিও তারা জানেন না।
তিনি বলেন, ডা. মহিবুল হাসানের মত ব্যক্তির দ্বারা এ ধরনের জঘন্য, নিম্নমানের ও রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করা কি আদৌ সম্ভব? অধ্যাপক ডা. মহিবুল হাসানের এ ধরণের কর্মকাণ্ডে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
অপরদিকে এঘটনায় গত ২৫ জুলাই বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের অভিযোগ ডা. মহিবুল হাসান নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। একই সাথে রয়্যাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অপর একটি অভিযোগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রয়্যাল হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইকবাল বারি, ডা. আজগর হোসেন, ডা. তানজিলা আলম, রয়্যাল হাসপাতালের ম্যানেজার কাজেমুল হক।


প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৩ | সময়: ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ