মাধ্যমিকে পাসের হার কমে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ

সানশাইন ডেস্ক: নানা দুর্বিপাকে বিলম্বিত এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা গতবারের চেয়ে কম।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্কুলের গণ্ডি অতিক্রম করা এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে, যা উত্তীর্ণের মোট সংখ্যার ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৬ হাজার ২৬২ জন।
গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল রেকর্ড ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সকালে তার কার্যালয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে।
দুপুর ১টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে এলেও মহামারীতে শিক্ষাসূচি পাল্টে যাওয়ায় এ বছর সাড়ে চার মাস পিছিয়ে গত ১৯ জুন এ পরীক্ষা শুরুর দিন ঠিক হয়েছিল।
পরে বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া সে পরীক্ষা শুরু হয় আরও তিন মাস পর, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে।
দিনাজপুর বোর্ডে প্রশ্ন ফাঁসের কারণে চার বিষয়ে নতুন সূচিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ নিয়ে সংশয় তৈরি হলেও তা উৎরে গেছেন সংশ্লিষ্টরা। মহামারীতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এ বছরও পুনর্বিন্যস্ত ও সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে সময় কমিয়ে দুই ঘণ্টায় পরীক্ষা নেওয়া হয়। নম্বর কমিয়ে বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে পরীক্ষা হয় ৫০ নম্বরে। এছাড়া ব্যবহারিক আছে এমন বিষয়ে ৪৫ নম্বরে ও ব্যবহারিক নেই- এমন বিষয়ে ৫৫ নম্বরের পরীক্ষা হয়।
ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- এসব বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।
২০২২ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও সমমানের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯জন পাস করেছে। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ বোর্ডে ৮৮ দশমিক ১০ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৮২ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে ৮৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
এবারও পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা- দুদিক দিয়েই সংখ্যায় এগিয়ে আছে মেয়েরা। ছাত্রদের পাসের হার যেখানে ৮৭ দশমিক ১৬ শতাংশ, সেখানে ছাত্রীদের মধ্যে ৮৭ দশমিক ৭১ শতাংশ পাস করেছে। মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৯ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৩ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৬ জন।
আর ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৩ জন। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্রী এবং ১ লাখ ২১ হাজার ১৫৬ জন ছাত্র। চলতি বছর ৯টি সাধারণ বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে ৯৭ দশমিক ০৯ শতাংশ ছাত্র ও ৯৭ দশমিক ০৮ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে।
মানবিকে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ছাত্র ও ৮২ দশমিক ৫৫ শতাংশ ছাত্রী এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ ছাত্র ও ৯২ দশমিক ৯২ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। এবারও শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটের পাশাপাশি মোবাইল ফোন থেকে এসএমএস পাঠিয়ে পরীক্ষার ফল জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১২টা থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে ফলাফল পাওয়া যাবে। িি.িবফঁপধঃরড়হনড়ধৎফৎবংঁষঃং.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ফল জানা যাবে। আর মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২২ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসেই ফল পাওয়া যাবে।
দাখিলের ফল পেতে উধশযরষ লিখে স্পেস দিয়ে গধফ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২২ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। আর কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে ঞবপ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২২ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফল জানানো হবে।


প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২ | সময়: ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ