জামায়াত নেতার সঙ্গে সাবেক ক্রিকেটারের ছবি নিয়ে রাজশাহীতে তোলপাড়

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর এক সময়ের শীর্ষ শিবির ক্যাডারদের তালিকার প্রথমেই মান ছিল আশরাফুল আলম ইমনের। সে সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হোসেন হত্যা ও রাইফেল কেড়ে নিয়ে পুলিশ পেটানোসহ ৪২টি মামলা ছিল এই সাবেক শিবির নেতার বিরুদ্ধে।
সেই শিবির নেতার সঙ্গে এক টেবিলে দেখা গেছে বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটকে। এ ধরণের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে রাজশাহীতে চলছে তোলপাড়। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।
গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া একটি ছবিতে খালেদ মাসুদ পাইলট মাঝখানে বসে আছেন। আর ইমন তার বাম পাশে এবং ডান পাশে বসে রয়েছেন আরেক সাবেক শিবির নেতা। খালেদ মাসুদ পাইলটের বাড়ি রাজশাহী নগরীর সাগরপাড়া এলাকায়। ঈদের পর কোন একদিন সাগরপাড়া এলাকায় তাদের দুইজনের সাক্ষত হয় বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশরাফুল আলম ইমনের বাড়িও রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানার সাগরপাড়া এলাকায়। ইমন বর্তমানে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) জামায়াতে ইসলামীর সুরা সদস্য। এছাড়াও তিনি জামায়াতে ইসলামের মিডিয়া শাখার পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। সে সুবাদে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।
একাধিক সূত্রমতে, ঈদের পর রাজশাহীতে এসে খালেদ মাসুদ পাইলটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন জামায়াত নেতা আশরাফুল ইসলাম ইমন। সাগরপাড়ার এলাকার একটি বাড়িতে ওই বৈঠকে সাবেক ক্রিকেটার পাইলট কেন গিয়েছিল তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
সূত্রমতে, জামায়াত নেতা ইমন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হোসেন হত্যা মামলা, রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল তুহিনের ওপর হামলা ও রগ কাটা মামলা, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আখেরুজ্জামান তাকিমের ওপর হামলা ও রগকাটা মামলা, পুলিশের বিস্ফোরক আইনে মামলাসহ ৪২টি মামলা রয়েছে। এ মামলাগুলোর মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি তিনি।
মূলত: এতো মামলার আসামির সঙ্গে কেন খালেদ মাসুদ পাইলট বৈঠক করছেন এবং সেই ছবি কিভাবে গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এসেছে তা নিয়ে রাজশাহীতে চলছে ব্যাপক সমালোচনা ও জল্পনা কল্পনা। এ নিয়ে কথা বলার জন্য খালেদ মাসুদ পাইলটের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আশরাফুল আলম ইমন বলেন, ‘‘পাইলট ভাইয়ের বাড়ির পাশে আমাদের বাড়ি। আমি ঈদের পর বাড়িতে গিয়েছিলাম। সে সময় তার সঙ্গে আমার সৌজন্য সাক্ষাত হয়েছে প্রতিবেশী বড় ভাই হিসেবে। সেটি কোন নির্ধারিত বৈঠক ছিল না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে ৪২টি মামলা রয়েছে তা রাজনীতিক মামলা। এর মধ্যে ২৫টি মামলায় আমি বেকসুর খালাস পেয়েছি। বাকি মামলাগুলোতে জামিনে আছি। ওই মামলাগুলোর কোন মেরিট নেই। সেগুলোতেও খালাস পাব বলেও দাবি করেন তিনি।
বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট ও জামায়াত নেতা আশরাফুল আলম ইমনের ছবি গণমাধ্যমে আসলে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নজরে আসে। বিষয়টি নিয়ে তারা খোঁজ খবর নিচ্ছেন। আসলে সেটি কোন বৈঠক নাকি সৌজন্য সাক্ষত সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, ইমনের বাড়ি আমাদের মহল্লায়। ঈদের পর সে দেখা করতে আসে আমাদের বাসায়। এ সময় একটা তোলা হয়। কেউ হয়তো বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়েছেন। এটা কোনো বৈঠক ছিল না। এটা নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই।


প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২৩ | সময়: ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর