ভোটের ব্যবধান বাড়াতে চান লিটন

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে দিন ঘনিয়ে আসায় এখন প্রচারে সরগরম নগরী। হাতে আর কটা দিন রয়েছে প্রচারের। আগামী ২১ জুন এ সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের নির্বাচনে একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনীত এএইচএম খায়রুজ্জামান শুরু থেকেই সাজিয়েছেন মাঠ। নির্বাচনে জয়লাভ এখন তার নাগালের মধ্যেই। তবে লিটন চান ভোটের ব্যবধান। সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে জয় পেতে চান তিনি। সাধারণ মানুষও ভাবছেন লিটনের জয় হবে এবার সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানেই।
গত ৫ বছরে রাজশাহীর উন্নয়নে নগরবাসীর কাছে পরিক্ষিত তিনি। তার বহুমাত্রিক উন্নয়নের কারনে শুরু থেকে তার প্রতি আস্থাশীল রাজশাহীর ভোটারারা। এ ক্ষেত্রে খায়রুজ্জামান লিটনও আশা করছেন বিপুল ভোটের ব্যবধানে তৃতীয় দফায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র হতে। এ কারণে ভোট কেন্দ্রে ভোটার বৃদ্ধির সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির পর থেকে রাজশাহীর মানুষের সঙ্গে অবিরাম রয়েছেন লিটন। এবারের নির্বাচনে অন্য যারা প্রতিদ্বন্দ্বি করছেন সাধারণ মানুষের কাছে তদের কোনো ফেসভেল্যূ নেই। এ কারণে সাধারণ মানুষ ভাবছেন প্রার্থীদের গুনবিচারে লিটনের কোনো বিকল্পই নাই রাজশাহী শহরে। এখন ভোটের অপেক্ষা।
এবারো মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জজাম লিটনের জয়ের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও নিশ্চত। শুরু থেকে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও রাজশাহীর নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী থেকে শুরু করে সব শ্রেনীর মানুষ মাঠে নেমেছেন লিটনের পক্ষে। তবে অন্য প্রার্থী জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পাটির লতিফ আনোয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। তারা ভোটের প্রচারেও নাই। তাই লিটনকেই আবারো মেয়র হিসেবে ভাবছেন মানুষ।
খায়রুজ্জাজামান লিটন এখন চান বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করতে। সে অনুযায়ী মানুষকে সম্পৃক্ত করছেন তিনি। নির্বাচনী জনসংযোগ আরো বাড়িয়েছেন লিটন। পথসভায় তিনি বেশী ভোট পেতে নাগরিকদের উদ্বৃদ্ধ করছেন।
লিটন বলছেন, যত বেশি ভোটের ব্যবধানে আমাকে বিজয়ী করবেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ততবেশি অর্থ বরাদ্দ এনে রাজশাহীর উন্নয়ন করতে পারবো। লিটন বলছেন, রাজশাহীর উন্নয়ন চলমান রাখতে ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০১৯ সালে রাজশাহীর উন্নয়নে ২৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পের অনুমোদনের পরপরই রাজশাহীসহ সারা বিশে^ করোনা মহামারির সংক্রমন দেখা হয়। সকল কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণ সামগ্রী ও ডলার দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে আড়াই বছর তেমন উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে যে অল্প সময় কাজ করতে পেরেছি, তার উন্নয়ন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, প্রশস্ত সড়ক, আলোকায়ন, সড়ক বিভাজকে ফুলের বাগান ইত্যাদি অনেক উন্নয়নে দেশ-বিদেশে অর্জন করেছে রাজশাহী। এই অর্জন ধরে রেখে রাজশাহীকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ি হওয়া।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে এবার দরকার কর্মসংস্থান। ইতোমধ্যে রাজশাহীতে বিসিক শিল্পনগরী-২ ও চামড়া শিল্প পার্ক অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিসিক-২ এর কাজ শেষ হয়েছে। চামড়া শিল্প পার্ক হতে যাচ্ছে। এই দুই জায়গায় ঢাকা থেকে শিল্পপতিদের নিয়ে এসে শতাধিক শিল্পকারখানা করতে পারলে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আমি প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে হলেও বিত্তশালীদের রাজশাহীতে বিনিয়োগের জন্য নিয়ে আসবো। আমি আপনার সন্তানদের কর্মের ব্যবস্থা করতে চাই, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করুন। যত বেশি ব্যবধানে আমাকে বিজয়ী করবেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ততবেশি অর্থ বরাদ্দ এনে উন্নয়ন করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহীর পদ্মা নদীকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করার ইচ্ছে রয়েছে। ভারতের মুর্শিবাদের ধুলিয়ান থেকে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ হয়ে আরিচা পর্যন্ত নৌরুট চালু করতে চাই। এটি চালু হলে ভারত থেকে পাথর, ফ্লাই অ্যাশ সহ প্রয়োজনী পণ্য আনা যাবে। রাজশাহীতে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানী করা যাবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অনেক কর্মসংস্থান হবে।
খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীতে তরুণ-তরুণীদের জন্য শহরে ১০টি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথাও জানান। সেখানে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণ-তরুণীরা ঘরে বসে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। সেই কাজের ক্ষেত্রও আমরা দেখিয়ে দেবো। লিটন বলেন এখন ভোটের ব্যবধান বাড়াতে হবে।


প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩ | সময়: ৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ