রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সির ঘটনায় মামলা: ছাত্রলীগ নেতা, বিসিএস নন-ক্যাডার কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ৮

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২২-২৩ সেশনে স্নাতক প্রথমবর্ষ ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সির ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করেছে মতিহার থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে এক রাবি শাখা ছাত্রলীগ নেতা ও বিসিএস নন-ক্যাডার কর্মকর্তাও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম বাদী হয়ে দায়েরকৃত পৃথক পৃথক ছয়টি মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যটি জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক।
তিনি জানান, ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দেয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টে মামলা করেছেন। এতে ষোল জনকে আসামী করা হয়েছে। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের কাজ চলছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ঝিনাইদহ জেলার ইব্রাহিমের ছেলে ইসরাফিল হোসাইন, নওগাঁ জেলার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে স্বপন হোসাইন। তিনি রাবি লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের ছাত্র, জয়পুরহাট জেলার গোলাম মোস্তফার ছেলে আব্দুর রাকিব, একই জেলার আব্দুল কালামের ছেলে বিদ্যুৎ হাসান, কক্সবাজার জেলার আব্দুল কাশেমের ছেলে এনামুল হক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের ছাত্র।
পাবনা জেলার আব্দুল হান্নানের ছেলে সোহানুর রহমান, নাটোর জেলার হাসিবুল ইসলাম শান্ত। তিনি রাবির ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক এবং ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ প্রত্যাশী। গ্রেফতারের পর তার নিকট জারিয়াতির বহু তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে পুলিশ। আবার বিসিএস নন-ক্যাডারে শেখ আবু হানিফ নামের এক বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা। তিনি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার শেখ আবুল খায়েরের ছেলে।
এছাড়া অন্যান্য আসামীদের মধ্যে জাহিদ আল হাসান সিয়াম, মাইনুল ইসলাম, তানভীর আহমেদসহ অজ্ঞাতনামা অন্যান্যরা পলাতক রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনতে মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। এব্যাপারে কোন ছাড় নয়। এই চক্রের মূল হোতাদের খুঁজে বের করার কাজ চলছে। এ ঘটনায় জড়িত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ব্যাপারেও দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় বা চাকুরির ভর্তি পরীক্ষাতেও গ্রেফতারকৃতদেও জালিয়াতি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা আমরা জানতে পেরেছি। কিন্তু এসকল জায়গা থেকে তাদের আটকের খবর আমরা পাইনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলে সতর্ক অবস্থানে আছে বলেই জালিয়াত চক্রকে ধরা সম্ভব হয়েছে।
এসময় অন্যদের মধ্যে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক খাদেমুল ইসলাম মোল্লা, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার একরামুল হক প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।


প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ | সময়: ৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ