রাজশাহীতে ঝরে পড়ল বিপুল পরিমান আম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে আড়াই টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে ঝরে পড়া আম। বুধবার বিকেলে ও দিবাগত রাতের ঝোড়ো হাওয়ায় ঝরে পড়া আম জেলার বাঘায় আড়াই টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মাত্র ১০০ টাকা মণ দরে উপজেলার আড়ানী পৌরসভার গোচর মোড়ে আম বিক্রি করেন স্থানীয় লোকজন ও ব্যসায়ীরা। ঢাকায় বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা আচার করার জন্য এসব আম কিনে নিচ্ছেন।
রাজশাহী কৃষি বিভাগের ভাষ্য, বাঘা উপজেলার একটি ইউনিয়নে আমের বেশি ক্ষতি হলেও অন্য উপজেলাগুলোতে অল্প ক্ষতি হয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাজিব খান বলেন, গত ২৭ এপ্রিল রাজশাহীতে ঝড় হয়েছিল। এতে বেশ কয়েকটা উপজেলার ওপর দিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাতে যা হয়েছে তা দমকা বাতাস। বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৩৭ কিলোমিটার। বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৯ দশমিক ৭ মিলিমিটার। বজ্রপাতও হয়েছে অনেক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতে বুধবার বিকেলে ও দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঝড় হয়। এই ঝড়ে গাছ থেকে অনেক আম ঝরে পড়েছে। গ্রামের সাধারণ মানুষ ও বাগান মালিকরা কুড়িয়ে উপজেলার বাজারগুলোতে সেই আম বিক্রি করেন। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা সেই আমগুলো ১০০ টাকা মণ দরে কেনে নেন।
আম বিক্রেতা রাজিব ও রেজুল মন্ডল বলেন, আচারের জন্য বেশি দামে গুটি জাতের আম কিনছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ঝড়ে পড়া আমগুলো পানির দামে কিনছেন। ব্যবসায়ীরা দাম দিতে চাচ্ছেন না। তারা আড়াই টাকা কেজি দরে আম কিনছেন। আমি ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। ঝড়ের সময়ে অন্যের বাগান থেকে তিন মণ আম কুড়িয়ে এনে ৩০০ টাকায় বিক্রি করেছি। মঙ্গলবারও ৪ মণ আম ১২০ টাকা মণ হিসেবে বিক্রি করেছি।
উপজেলার আড়ানী গোচর গ্রামের বাগান মালিক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার আম বাগানে প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমাণ আম আছে। ঝরে পড়া আম গ্রামের মানুষ কুড়িয়ে ১০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছে।
আম ব্যবসায়ী নাজিমুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে আমের ব্যবসা করি। বিশেষ করে কড়ালি ও ঝরে পড়া আম কিনে ঢাকায় চালান করি। প্রতি মণ ১০০ টাকা দর হিসেবে ক্রেতাদের কাছে থেকে ক্রয় করেছি।
তিনি আরও বলেন, এই আমগুলো পাকবে না। পাকাতে গেলে পচে যাবে। কারণ প্রতিটা আম আঘাত প্রাপ্ত। আর আঘাতপ্রাপ্ত আম কখনো পাকবে না। তাই এই আমে আচার তৈরি করা হবে। বেশির ভাগ আম ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন কোম্পানি আচারের জন্য আম কেনে।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, কিছু দিন আগে প্রচণ্ড রোদ ও খরা গেছে। এতে করে আমের বোঁটা শুকিয়ে ছিল। ফলে বাতাসে কিছু আম ঝরে গেছে। তা খুব বেশি নয়। এই আম বাঘার বিভিন্ন গ্রামের মোড়ে ও বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এ বছর বাঘা উপজেলায় আট হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাজদার হোসেন বলেন, রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় একটি বাগানে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চারঘাট ও পুঠিয়ার কিছু বাগানের আম ঝড়ে পড়েছে। যা অন্য ঝড়ের মতোই স্বাভাবিক। খুব একটা বেশি ক্ষতি হয়নি।


প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৩ | সময়: ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর