ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির শঙ্কায় আধা-পাকা ধান কাটছেন বরেন্দ্রের কৃষকরা

স্টাফ রিপোর্টার : প্রবল গতি নিয়ে উপকুলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এর প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে রাজশাহী অঞ্চলেও। তাই এ অঞ্চলের কৃষকরা বোরো ধান তুলতে তড়িঘড়ি শুরু করেছেন। বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কায় আধাপাকা ধানই ঘরে তুলছেন বরেন্দ্রের কৃষকরা।
রাজশাহীর কৃষকরা বলছেন, চলিত মৌসুমে দুই দফা কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেই আবার ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষতির শঙ্কায় এবার আধা-পাকা ধান কাটছেন কৃষকেরা। বিগত বছরগুলোতে ঝড়ে কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ায় এ বছর আগেভাগেই খেত থেকে ধান কাটতে দেখা গেছে তাঁদের। কৃষি কার্যালয়ের পরামর্শে ফসল বাঁচাতে ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। ইতিমধ্যে রাজশাহীর নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান কেটে ঘরেও নিয়েছেন অনেক কৃষক।
রাজশাহীর কৃষকরা বলছেন, ইতিমধ্যে বেশাীরভাগ ধান কেটে ধরে তুলেছেন তারা। মাঠে এখনো অনেক ধান রয়েছে। এগুলো ঠিকমত পাকে নি। আধাপাকা অবস্থায় রয়েছে। এখন ঘুর্ণিঘড়ের কারণে ধান নস্ট হতে পারে। সে কারণে আধা-পাকা ধানই ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন তারা। এতে ক্ষতি কিঠুটা হলেও কম হবে।
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার কৃষকরা জানান, কৃষি বিভাগ ধান কেটে ঘরে তুলতে পরামর্শ দিয়েছে। তবে ক্ষেতের অনেক ধান আধাপাকা রয়েছে। অনেক জায়গায় জমিতে ৭০ শতাংশ ও তাঁর নিচে আধা পাকা-ধান কাটতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, দ্রুত পাকা ধানসহ সব রবিশস্য ঘরে তুলতে নির্দেশ দিয়েছ কৃষি বিভাগ। এ কারণে কৃষকরাও তড়িঘরি ধান কাটতে শুরু করেছেন। শ্রমিক সংকট থাকলেও অতিরিক্ত মূল্যের শ্রমিক সংগ্রহ করছেন কৃষকরা।
শনিবার সরেজমিন জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে এখনো কাচা ধান রয়ে গেছে। ফলে কৃষকেরা তাদের ফসল নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। অনেকে আধাপাকা ধানই ধরে তুলছেন। তানোরের
দেবীপুর গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘ধানে শিষ দেখা দিলে সে সময় ঝড়, শিলা বৃষ্টিতে তাঁর জমিতে প্রায় ৩০ ভাগই ঝরে গেছে। এখন আবার ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের খবর পেয়ে আগেভাগেই আধা পাকা ধান কেটে নিচ্ছি। গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষক জামিল আহমেদ জানান, ‘আমার ধানের জমি নিচু এলাকায়। এখনো জমিতে পানি জমে রয়েছে। ধান এখনো পুরোপুরি পাকেনি। এ সময় ঝড় ও বৃষ্টি হয় তাহলে ধান মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আগেভাগেই আধা পাকা ধান কেটে নিচ্ছি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, রাজশাহী জেলায় এবার বোরো ধান আবাদের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা ছাড়িয়ে গেছে। ধানের ফলনও বেশ ভালোই হচ্ছে। এরইমধ্যে রাজশাহী জেলায় বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে। বলেন ঘুর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে এ অঞ্চলের বোরো আবাদ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। তাই যেসব জমির ধান সিংহভাগ পেকে গেছে সেসব ধান দ্রুত কেটে ঘরে তোলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৩ | সময়: ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ