সর্বশেষ সংবাদ :

‘ভালো কাজে, সবার সাথে’ তিনযুগে দৈনিক সানশাইন

মো. ইউনুস আলী:
দীর্ঘ পথ চলার তিন যুগ পার করতে চলেছে উত্তরাঞ্চলের পাঠক প্রিয় দৈনিক সানশাইন। নানা চরাই-উৎরায় পেরিয়ে পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এ বছরেই প্রকাশনার ৩৬ বছরে পদার্পন করবে। সে উপলক্ষে তিনযুগ পূর্তি। আজ থেকে ৩৫ বছর আগে পত্রিকাটির জন্ম হয়েছিলো ইংরেজি মাধ্যমে। তবে ইংরেজি পাঠকের অভাবে কিছুদিনের মধ্যে লেটার প্রেসে ছাপা হতো এটি। তখনও পাঠক প্রিয়তা অর্জন করতে পারেন নি প্রতিষ্ঠাকালিন সম্পাদক প্রয়াত সাখাওয়াত হোসেন।
তবে সময়ের প্রয়োজনে ২০০৪ সাল থেকে নতুন কলেবরে প্রকাশনা শুরু করে এ পত্রিকাটি। নতুন ব্যবস্থাপনায় পাঠক প্রিয়তা পেতে বেগ পেতে হয় নি তেমন। রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষ দ্রুত আকৃষ্ট হয় এ পত্রিকায়। পরিপাটি খবর পরিবেশন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবিচল থেকে গণতান্ত্রিক ও উদার সম্পাদকীয় নীতির কারনে পত্রিকাটি মানুষের পাঠক প্রিয়তায় রূপ লাভ করে।
আজ এ পত্রিকাটির তিনযুগ পূর্তি উৎসব। এ উৎসবে আপনাদের স্বাগত। দৈনিক সানশাইন রাজশাহী থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকা। সময়ের প্রয়োজনে এ পত্রিকাটি ২০০৪ সাল থেকে নতুন কলেবরে প্রকাশিত হয়ে আসছে। নিউজ ও সম্পাদকীয় নীতিতে অবিচল থাকার কারণে এখন এ অঞ্চলের মানুষের প্রিয় দৈনিকে পরিনত হয়েছে। এর পেছনের কারিগর অত্র পত্রিকার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই। যারা নিরলস পরিশ্রম করে এ পত্রিকাটি নিজেদের মনে করে সঙ্গে রয়েছেন। আর যারা বিজ্ঞাপন দিয়ে এ পত্রিকার প্রকাশনাকে করেছেন সমৃদ্ধ। আজ বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ীসহ সকলের প্রতি রইল আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন।
আধুনিকতার যুগে সারাবিশ্বেই ছাপা কাগজের চাহিদা কমেছে। পাঠক আর পাতা উল্টিয়ে খবরের দিকে চোখ রাখতে পারেন না। দেশে এবং বিদেশে এরইমধ্যে অনেক স্বনামধন্য পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের শীর্ষ অনেক সংবাদপত্র সীমিত হয়েছে। অনেকে অনলাইন ভার্সনে মনোযোগী হয়েছে। ডিজিটাল প্লাটফর্ম গড়ে পাঠক ধরে রাখার চেষ্টা করছে। তাদের সহযাত্রায় দৈনিক সানশাইনও পিছিয়ে নেই। অনেক চরাই-উৎরায় পেরিয়ে দৈনিক সানশাইনও প্রকাশের পাশাপাশি অনলাইনে সমৃদ্ধ হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে ডিজিটাল প্লাটফর্ম।
‘ভালো কাজে-সবার সাথে’ এই স্লোগান দৈনিক সানশাইনের। অর্থাৎ দৈনিক সানশাইন প্রতিষ্ঠলগ্ন থেকে সব ভালো কাজের সঙ্গে দৃঢ চিত্যে অগ্রসর হচ্ছে। দৈনিক সানশাইন আরো সামনে এগুতে চায়। এ ক্ষেত্রে সবসময় পাঠকের পরামর্শ ও সহযোগীতা একান্ত কামনা করছি।
গত তিন বছর বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে সারাবিশ্বেই টালমাটাল অবস্থা ছিলো। সেটি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে সারা বিশ্বে। এর প্রভাব পড়েছে গণমাধ্যমেও। বিশেষ করে প্রিন্ট মিডিয়ায় দারুণভাবে প্রভাব পড়েছে। কাগজের দাম বেড়েছে। ছাপানোর উপকরণের দাম বেড়েছে অনেক গুন। কিন্ত আমাদের আয়ের উৎস কমেছে। পত্রিকার প্রধান আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন। এখন সেই বিজ্ঞাপনের পরিধি কমেছে অনেকগুন। চারিদিকে মন্দার কারণে দৈনিক সানশাইনও তিন যুগ পূর্তির এই ক্ষণে অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে পড়েছে। তারপরেই আপনাদের অকুন্ঠ ভালোবাসা ও সহযোগীতায় আমরা এগিয়ে চলেছি। এখনো ছাপা কাগজের গুরুত্ব রয়েছে অপরিসীম। মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে সবার আগেই পত্রিকাই খুঁজে। তাই আমরাও প্রবল আস্থায় পাঠক ধরে রাখার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছি। অতীতে যেভাবে আমাদের সঙ্গে ছিলেন Ñএখনো আছেন, আগামীতেও আপনাদের পাশে চাই।
রাজশাহী ও উত্তরাঞ্চলের মানুষের প্রিয় পত্রিকা দৈনিক সানশাইন। এ পত্রিকায় স্থানীয় খবরের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশী। পাশাপাশি, জাতীয়, রাজনৈতিক, সংস্কৃতি, শিক্ষা, ক্রীড়াসহ বিচিত্রতা ও বিদেশের খবরও প্রকাশ করে আসছে।
দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় সাধারণ মানুষের প্রিয় মুখপত্র হয়ে উঠেছে রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক সানশাইন। একটি খবরের কাগজ কেবলমাত্র জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক খবর পরিবেশন করেই ক্ষান্ত থাকে না। প্রতিদিন কাগজটিকে সাজানো হয়- খবর, খেলাধূলা, ধর্মীয় প্রতিবেদন, কৃষি, রান্না-বান্না, আনন্দ প্রতিবেদন, শিল্প বানিজ্য, অর্থনীতি, সাহিত্য, নারী চিত্র, আন্তর্জাতিক বিবিধ বিষয়ের সাথে স্থানীয় সংবাদ দিয়ে।
স্থানীয় সংবাদ গুরুত্ব পেয়ে ছাপা হয় সানশাইনের প্রথম পাতায়। ফলে এ কাগজটি গভীর ভাবে আকর্ষণ করে এ অঞ্চলের মানুষকে। সংবাদের পাশা-পাশি থাকে সম্পাদকীয় কলাম। বলতে গেলে সংবাদপত্রের সবধরনের গুনাবলী রয়েছে দৈনিক সানশাইন পত্রিকায়। নানা কারণে এ পত্রিকাটি সকল স্তরের পাঠকের নিকট এক অনন্য উচ্চতায় স্থান করে নিয়েছে।
প্রথমে ইংরেজি ভার্সনে প্রকাশিত হলেও এখন বাংলায় রুপান্তর হয়ে প্রকাশের পর থেকে পাঠকদের প্রিয় কাগজ হয়ে উঠেছে সানশাইন। জাতীয় সংবাদের পাশাপাশি স্থানীয় সংবাদ বেশ গুরুত্বদিয়ে প্রকাশ করতে থাকায় খুব অল্প সময়ের পাঠক প্রিয়তা অর্জন করে।
অনিয়ম, দুর্নীতির খবর প্রকাশের পাশাপাশি গ্রামের কোনে লুকিয়ে থাকা প্রতিভাকে সামনে নিয়ে এসে সবার নিকট পৌঁছে দেয়ার নাম এখন সানশাইন। তাই তিনযুগ পূর্তির এই মাহিন্দ্রক্ষণে সবাইকে সানশাইনের সঙ্গে আস্থায় থাকার প্রত্যাশা।


প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৩ | সময়: ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ