বাসন্তী রঙে ভালোবাসায় একাকার রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার : ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিনে ভালোবাসার আলোকছটায় রঙিন যেন চারিদিক। এ দিনটি তো রঙিণ হওয়ারই কথা। বিভাগীয় শহর রাজশাহীতেও এর ব্যতিক্রম হয় নি। ঋতুরাাজ বসন্ত, যৌবনের উদ্দামতা বয়ে আনার বসন্ত আর আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও উদ্বেলতায় মন-প্রাণ একাকার হয়েছে এ শহরেও।
করোনার কারণে গেল দুই বছর রঙিন বসন্ত ছিল অনেকটায় অমলিন। তাই সেই বাসন্তী উৎসবকে পূর্ণতা দিতে এবার শহর জুড়েই আয়োজন করা হয়েছে নানান অনুষ্ঠান। রাজশাহী কলেজ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও নগরীর বিনোদন স্পটে রঙিন হয়ে উঠে দিনভর বাসন্তি আমেজে।
মঙ্গলবার সকালেই রাজশাহী কলেজ থেকে শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টেসহ বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আলোচনা সভা, গান, নৃত্যসহ দিনভর নানান আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, বরাবরের মত বসন্তের মূল আকর্ষণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উচ্ছাস ছড়িয়ে পড়ে আরও বেশী। বিশেষত রাবির চারুকলায়। শুকনো পাতার মড় মড় ধ্বনি ভেঙে শিক্ষার্থীরা আড্ডা-গানে পার করেছে ভালোবাসা আর বসন্ত দিন।
সকাল থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রাণের উচ্ছ্বাসে বসন্ত বরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রা, কবিতা আর গানে নেচে-গেয়ে বরণ করে নেওয়া হয় ঋতুরাজ বসন্তকে। দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত ছিলেন রাবি শিক্ষার্থীরা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যোগ দেন ক্যাম্পাসের নানা অনুষ্ঠানে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে উদযাপন করা হয় বসন্ত বরণ উৎসব। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ নিজ-নিজ আয়োজনে মেতে ছিলেন দিনভর। প্রাণ উজাড় করে যে যার মতো করে বসন্তকে বরণ করে নিয়েছেন।
রাজশাহী শহর জুড়েই খন্ড খন্ড শোভাযাত্রা, আলাদা আলাদা কবিতাপাঠের আসর, নাচ আর গানের ছন্দে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে পালন হয় বাসন্তী উৎসব। বছর ঘুরে নতুন উপলক্ষ পাওয়া রাজশাহীর সংস্কৃতিমনা মানুষগুলো থেমে ছিলোনা এদিন। ফাল্গুনী উৎসবে তাই যেন লেগেছে স্বপ্নজয়ী তারুণ্যের ঢেউ।
সকাল গড়াতেই মহানগরীর বিভিন্ন বিনোদন স্পটেও ঢল নামে তরুণ-তরণী যুবক-যুবতীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের।
এবারও বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবস একই দিনে হওয়ায় ভিন্নমাত্রা পেয়েছে বাসন্তী উৎসব। মেয়েদের পরনে হলুদ রঙের শাড়ি, খোপায় গাঁদা ফুল, আবার কারও কারও খোপায় রঙিন ফুলের রিং, কারও খোপায় আবার দেখা গেছে ফুলের গাজরা। ছেলেদের পরনে হলুদ অথবা সফেদ রঙের পাঞ্জাবি। এমনি বাহারি রঙের পোশাক পরে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে দেখা গেছে- নগর যুবাদের। তাদের পাশে আছে মধ্যবয়সী নর-নারী ও কোমল শিশুর দল।
রাজশাহীর জিয়া শিশু পার্ক, বড়কুঠি পদ্মাপাড়ে, টি-বাঁধ, ভদ্রার শহীদ মনসুর রহমান পার্ক, পদ্মা গার্ডেনসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় লক্ষ্য করা দিনভর। কেউ বন্ধু-বান্ধবীকে নিয়ে, কেউ প্রিয়তমা, আবার কাউকে পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়িয়েছেন।
কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বসন্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস দুটি মিলে গেছে। বাঙ্গালীর যে সংস্কৃতি তা কাজে লাগিয়ে এবং প্রকৃতির রঙ বদলের সঙ্গে ফুলে ফুলে ছড়িয়ে গেছে ফাগুনের উন্মাদনা। বসন্তের শুভ বার্তা বাংলাদেশর মানুষের জন্যও মঙ্গল বয়ে আসুক এই কামনা করেন তারা।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩ | সময়: ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ