হতাশা কাটিয়ে সোনালী আঁশে কৃষকের হাসি

সেলিম সানোয়ার পলাশ, গোদাগাড়ী: অনাবৃষ্টি ও খাল বিলে পানি না থাকায় পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছিল পাট চাষিরা। এক দিকে অনাবৃষ্টিতে ক্ষেতে পাট পুড়ছিলো অন্য দিকে খাল বিলে পানি না থাকায় পাট কাটার পর পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছিল এ অঞ্চলের পাট চাষিরা। যার ফলে হতাশায় ছিল পাট চাষিরা। পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কষ্ট ও হতাশার মধ্যে থাকলেও পাটের দাম ভাল পাওয়ায় সকল কষ্ট ও হতাশার ভুলে গিয়ে সোনালী আঁশে হাসি ফুটেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাট চাষিদের মুখে। চলতি মৌসুমে পাট চাষের প্রতিকুল আবহাওয়া থাকলেও পাটের দাম ভাল পাওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছে পাট চাষিরা । বর্তমানে এ উপজেলায় প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা পাটের আঁশ ছড়াতে ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এছাড়াও কৃষকদের আড়তে গিয়ে পাট বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে প্রায় চলতি মৌসুমে পাট চাষ হয়েছে ৮৯০ হেক্টর জমিতে। গত মৌসুমে এ উপজেলায় পাট চাষ হয়ে ছিল ১ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে । উপজেলার চর আষাঢ়িয়াদহ, মাটিকাটা,বাসেদেবপুর ও দেওপাড়া ইউনিয়নে বেশী পাটের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নে সব চাইতে বেশী পাট চাষ হয়েছে।
উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামের পাট চাষি বাবু বলেন, চলতি মৌসুমে অনা বৃষ্টির কারনে ক্ষেতে পাট গাছ পুড়ে যাচ্ছিল। পাট কাটার পর খাল বিলে পানি ছিল না বলে পাট জাগ দেয়া নিয়ে পড়তে হয়েছিল বিপদে। টলি ভাড়া করে ক্ষেত থেকে পাট কাটার পর জাগ দেওয়ার জন্য পদ্মা নদীতে নিয়ে গিয়ে পাট জাগ দিতে হয়ে ছিল। এত করে কিছুটা খরচও বেড়েছে। তাই পাট নিয়ে খুব দুশচিন্তায় ছিলাম।
তিনি আরো বলেন, পাটের ফলন বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ মণ করে হচ্ছে। তবে পাটের দাম ভাল পাওয়ায় আর কোন দুশচিন্তা নেই। সকল ক্ষতি পুষিয়ে লাভ হবে।
পিরিজপুর গ্রামের কৃষক তেনু বলেন, দেড় বিঘা পাট চাষ করে ছিলাম। খাল বিলে পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তাই ক্ষেতেই বিঘা প্রতি ১০ হাজার টাকা করে পাট বিক্রি করে দিয়েছি। এতে আমার লস হয়নি। পাট চাষের খরচ উঠে কিছু লাভ হয়েছে। বর্তমানে পাটের যে দাম, যদি কষ্ট করে পাট কেটে জাগ দিতাম তাহলে লাভ ভালো হতো।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার আবুল হোসেন বলেন, অনাবৃষ্টির কারনে পাটের কিছুটা ক্ষতি ও খাল বিল ডোবাই পানি না থাকায় ক্ষেত থেকে পাট কেটে জাগ দেওয়ার জন্য কৃষকের কিছুটা সমস্যা হলেও পাটের দাম ভাল পাচ্ছে কৃষকেরা। এতে করে কৃষকেরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছে।


প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২২ | সময়: ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর