সর্বশেষ সংবাদ :

রাষ্ট্রপতি নিয়ে ভাবছে না বিএনপি

সানশাইন ডেস্ক: দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, সেটা ভাবনাতে নেই বিএনপির। তবে দলটি বেশি ভাবছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ নিয়ে। এর সঙ্গে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, দলীয় চেয়ারম্যানসহ নেতাদের মুক্তি, তেল গ্যাস বিদ্যুৎ-সহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ১০ দফা দাবি নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
এই লক্ষ নিয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে বিএনপি। দলের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন, বর্তমান জাতীয় সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ক্ষমতাসীন সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী যাকে পছন্দ করবেন, তিনিই দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন। সঙ্গত কারণে নতুন রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব লোক হবেন। আর সে কারণেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনও আগ্রহ নেই।
তবে বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, সরকার যদি চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের লক্ষে আলোচনার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেত, সেক্ষেত্রে বিএনপি কিছুটা হলেও আগ্রহী হতো। রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে বিএনপি মনে করে, দেশের স্বার্থে এমন ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি হওয়া উচিত, যিনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখবেন এবং রাষ্ট্রপতির পদের মর্যাদা রক্ষা করবেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৪ এপ্রিল বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হবে। যেহেতু বিএনপির এমপিরা জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, তাই বর্তমানে সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। বিএনপির তরফ থেকে তারা কেমন রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন-এ প্রসঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের রাষ্ট্রপতি পদে এমন মানুষই থাকা দরকার, যিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই পদমর্যাদা রক্ষা করতে পারবেন। যিনি দল-মত নির্বিশেষে নিরপেক্ষ থাকবেন। দেশের স্বার্থে সব ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলকে সমান চোখে দেখবেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ যাকে রাষ্ট্রপতি করবে, তার কাছ থেকে এমনটা আশা করা যায় না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেহেতু সংসদে আওয়ামী লীগের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, সেহেতু তারা যাকে ইচ্ছে করবেন তিনিই রাষ্ট্রপতি হবেন। ফলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিষয়ে আমরা কিছুই ভাবছি না। আমরা এখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষে আন্দোলনে রয়েছি। দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী যাকে পছন্দ করবেন, তিনিই হবেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয় বলেই আমাদের কোনও চিন্তা-ভাবনা, আগ্রহ বা মাথাব্যথা নেই। আমরা বর্তমানে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছি। এটাই বর্তমানে আমাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নতুন রাষ্ট্রপতি কে হবেন-এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ নেই। দেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তার নিজের ভোট দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায়। যে সরকারের জনগণের প্রতি জবাবদিহি থাকবে। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির আগ্রহ নেই। রাষ্ট্রপতি যদিও দেশের এক নম্বর নাগরিক এবং পদটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপতি পদের মর্যাদা তারা নষ্ট করেছে। তবুও আমাদের আগ্রহ থাকত যদি সরকার চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ দিতেন। দেশে এখন রাজনৈতিক সেই পরিবেশ-পরিস্থিতি নেই। আমাদের সব আগ্রহ, চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা হচ্ছে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে। সে লক্ষেই রাজপথে আমাদের আন্দোলন চলছে। সাধারণ মানুষও বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে আছে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩ | সময়: ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ